রবিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

টোল বন্ধ পোস্তগোলা স্বাভাবিক, পরিবহন শ্রমিকদের স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর (পোস্তগোলা সেতু-১) টোল বাড়ানোকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে টোল বন্ধ রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। টোল বন্ধ থাকায় পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে। তারা বলছেন, স্থায়ীভাবে পোস্তগোলা সেতুর টোল বন্ধ করা হোক। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পোস্তগোলা সেতুতে এ চিত্র দেখা গেছে। এদিকে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা, পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা ও হামলা, সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে ভাঙচুরের ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। ঢাকা জেলা পুলিশের কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত এসপি রামানন্দ সরকার বলেন, ‘শুক্রবার শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় একটি রেস্টুরেন্টে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। বিআরটিএ অফিসের ভিতর আনসার ক্যাম্পে ইটের খোয়াভর্তি ট্রাক চালিয়ে পুলিশকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে শ্রমিক মারা গেছেন তিনি কার গুলিতে মারা গেছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সংঘর্ষের ঘটনায় একাধিক মামলা হবে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।’ পোস্তগোলা সেতুর ইজারাদার মোহাম্মদ আলম বলেন, শুক্রবার সংঘর্ষের পর থেকে কোনো টোল আদায় করা হচ্ছে না। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক চলছে। মন্ত্রণালয়ের সচিব আপাতত টোল আদায় বন্ধ রাখতে বলেছেন। ২২ অক্টোবর থেকে তিন বছরের জন্য পোস্তগোলা সেতুর ইজারা পান তিনি। ইজারা-পরবর্তী বিভিন্ন পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ আন্তজেলা ট্রাকচালক ইউনিয়নের সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিক সোহেল নিহতের ঘটনায় একটি এজাহার দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। ফের টোল আদায় শুরু হলে ঢাকা শহরের সব পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর কোনো শ্রমিক মরতে দেওয়া হবে না। সোহেলের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে মাতম চলছে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিহত সোহেলের ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। পাশাপাশি পোস্তগোলা সেতুর টোল আদায় স্থায়ীভাবে বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

চোখ হারানোর শঙ্কা গামেন্টকর্মীর : গার্মেন্টকর্মী তাসলিমার শরীরে পাঁচটি স্প্লিন্টার। তার বাঁ চোখে তিনটি এবং হাতে দুটি স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়েছে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শ্রমিক সংঘর্ষের ঘটনার সময় আহত তাসলিমার মেয়ে মুক্তা গতকাল এসব কথা জানান। তিনি জানান, তারা ইকুরিয়ায় স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড ভবনের পঞ্চম তলায় থাকেন। বাবা রিকশাচালক জামাল। তারা তিন ভাই ও এক বোন। ঘটনার সময় বেলা ১১টার দিকে সকালের খাবার শেষ করে জানালা দিয়ে তাকাতেই তার মায়ের চোখে ও হাতে পাঁচটি স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। প্রথমে তাকে আদ্-দ্বীন হাসপাতালে এবং পরে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার দুই চোখ পুরো ফুলে গেছে এবং তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করছেন। গতকাল তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর