মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ

মনোনয়ন চাওয়ার আগ পর্যন্ত খেলাপি ঋণ শোধ করা যাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সুযোগ রেখে সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আইনের (আরপিও) খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে এখন ব্যালট পেপারে প্রচলিত পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের পাশাপাশি ইভিএমেও ভোট গ্রহণ করা যাবে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা নিয়মিত বৈঠকে সংশোধিত আরপিও আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। ফলে বর্তমান সংসদের কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন সংশোধিত এই গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে। মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখন যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও আছে সেটি করা হয়েছিল ১৯৭২ সালে। এটিতে সামান্য সংশোধন এনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইভিএম ছাড়াও সংশোধিত আরপিওতে আরও দুটি বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী ব্যক্তি মনোনয়নপত্র দাখিলের আগ পর্যন্ত খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন। এটি আইনে সংযোজন করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সাত দিন আগে প্রার্থীদের খেলাপি ঋণ পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা ছিল।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সংশোধিত আইনে আরেকটি বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। এটি হচ্ছে বিদ্যমান ব্যবস্থার পাশাপাশি এখন থেকে প্রার্থীরা অনলাইনেও মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ইভিএমের অপব্যবহার করলে সর্বনিম্ন তিন বছর এবং সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত সংশোধিত আইনে।। তিনি জানান, ইভিএম মেশিন যদি কেউ ভাঙচুর করে বা ডিভাইস নষ্ট করে অথবা ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করে তাহলে সর্বোচ্চ ৭ বছর ও সর্বনিম্ন তিন বছরের কারাদণ্ড হবে।

তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে শঙ্কা দূর করার জন্য ডিটেইল আউটলাইনে সেফটি মেজারগুলো আইনে বলে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কত কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু সংসদ শেষ হয়ে গেছে, সে কারণে এটি রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে। এদিকে আরপিও ছাড়াও মন্ত্রিসভার গতকালের বৈঠকে ইট প্রস্তুত ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন-২০১৮-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বলা হয়, কেউ ইটভাটা নির্মাণ ও ইট প্রস্তুত সংক্রান্ত লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করলে তাকে এক বছর কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। বিদ্যমান আইনে দণ্ডের মেয়াদ ঠিক থাকলেও অর্থদণ্ডের পরিমাণ ছিল মাত্র এক লাখ টাকা। আর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া মাটি কাটলে দুই বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা জরিমানা বিধান সংযোজন করা হয়েছে। এই অপরাধে বিদ্যমান আইনে দুই বছর কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানার বিধান ছিল। মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ আইন ২০১৮-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববদ্যালয় আইন-২০১৮-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এটি হবে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই সব রকম সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এর উপাচার্য (ভিসি) হবেন এয়ার ভাইস মার্শাল বা তদূর্ধ্ব ব্যক্তি কিংবা অবসরপ্রাপ্ত একজন ভাইস মার্শাল বা তদূর্ধ্ব ব্যক্তি। এ ছাড়াও মন্ত্রিসভার গতকালের বৈঠকে জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা-২০১৮ এবং জাতীয় টেলি যোগাযোগ নীতিমালা-২০১৮-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর