শুক্রবার, ২ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

যুক্তফ্রন্টে যোগ দিল ছয় দল

নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন : বি. চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক রাষ্ট্রপতি যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, সরকারি চাকরিজীবীদের বড় অংশ আওয়ামী লীগের দলীয় এজেন্টে পরিণত হয়েছে। তাদের নির্বাচনের কাজে যুক্ত করা যাবে না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। সংসদ ভেঙে দিন। নির্বাচনের সময় সংসদ সদস্য হিসেবে কারও কোনো ক্ষমতা থাকতে পারে না।

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গতকাল যুক্তফ্রন্টের সম্প্রসারণ ও ছয়টি রাজনৈতিক দলের যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান। সংলাপ প্রসঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী আরও বলেন, তারা (ক্ষমতাসীনরা) বলেছিলেন সংলাপ করবেন না। আমরা বলেছিলাম করতে হবে। সংলাপ আহ্বান করায় আমাদের দাবির বিজয় হয়েছে। সংলাপ ছাড়া চলমান সংকটের সমাধান হবে না। তিনি আরও বলেন, সংলাপে আমরা দেশের স্বার্থ, মানুষের কথা মাথায় রেখে কথা বলব। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে নিরপেক্স সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করব এবং কীভাবে তা হতে পারে সে বিষয় নিয়ে আলোচনাসাপেক্ষে ঠিক করা হবে। কারণ দেশবাসী সুষ্ঠু নির্বাচন পেলেই কেবল সংলাপের বিজয় হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ করতে হবে। ইভিএম ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। নির্বাচন পর্যবেক্ষক আনতে হলে তাদের এক মাস আগেই আসার সুযোগ দিতে হবে। যে কোনো কেন্দ্র পরিদর্শন করার সুযোগ দিতে হবে বলে দাবি জানান তিনি। বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট বি চৌধুরী আরও বলেন, নির্বাচনের সময় সমাবেশ করতে দিতে হবে। সমাবেশ করার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ থাকতে পারে না। নির্বাচনের সময় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনীকে নিয়োগ দিতে হবে। আমাদের সেনাবাহিনী সারা বিশ্বে শান্তি রক্ষা করছে। দেশের শান্তির জন্য কেন কাজ করবে না? সামরিক বাহিনীর কোনো বিকল্প নেই। গণগ্রেফতারের সমালেচনা করে যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান আরও বলেন, গণগ্রেফতার বন্ধ করুন। আটকদের মুক্তি দিতে হবে। জনসভার ওপর বিধিনিষেধ চলবে না। এ দেশে পুলিশের অনুমতি নিয়ে জনসভা করতে হবে? এর চাইতে লজ্জার বিষয় আর হতে পারে না। দেশে উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে দাবি করে বি চৌধুরী বলেন, যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে ৫০ শতাংশ দুর্নীতি হয়েছে। ডিজিটাল আইন করা হয়েছে, সাংবাদিকদের কলম বন্ধ হয়েছে। তাদের মুখ বেঁধে দেওয়া হযেছে। তাদের হাত-পায়ে শিকল লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণের কণ্ঠ রোধ করে দেওয়া হয়েছে। এ আইন বাতিল করতে হবে। উন্নয়ন দেবেন, অথচ গণতন্ত্র দেবেন না, তা হবে না। জনগণ এমন উন্নয়ন চায় না। গণতন্ত্রকে মাইনাস করে উন্নয়ন হবে না। তিনি বলেন, আমরা দেশে অশ্রদ্ধার রাজনীতি চাই না। শ্রদ্ধার রাজনীতি দিয়ে দেশকে ভরে দিতে চাই। বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান বলেন, আমরা সংলাপে যাব। সেখানে আমরা অবশ্যই খাব। আমরা ডাল-ভাত খেতে যাব। ১৭ রকম খাবার খাব না। ডাল, ভাত, মাছ খাব। লাল রুটি খাব।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তুজা, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈশা, বিকল্পধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে যুক্তফ্রন্টে যুক্ত হওয়া ছয়টি দলের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি ইউনাইটেড ফ্রন্ট। এ ছাড়া বিকল্পধারায় যোগ দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা মো. গোলাম রেজা, গণফ্রন্ট নেতা কামাল পাশা, মুসলিম লীগ নেতা নূর এ আলম, জনদল নেতা জয় চৌধুরী ও খলিল চৌধুরী।

সর্বশেষ খবর