শিরোনাম
শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাংলাদেশে উৎপাদন হলো জাফরান

শেকৃবি সংবাদদাতা

বাংলাদেশে উৎপাদন হলো জাফরান

বাংলা নাম জাফরান, ইংরেজিতে স্যাফ্রন যার বৈজ্ঞানিক নাম Crocus sativas। সম্প্রতি রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) গবেষণায় দেশে সর্বপ্রথম জাফরান উৎপাদন সফলতার মুখ দেখেছে, যা বাংলাদেশে জাফরান উৎপাদনে একটি মাইলফলক। সেই বহুকাল ধরেই নানা মুখরোচক খাবারকে আরও সুস্বাদু করাসহ মূল্যবান প্রসাধনীতে জাফরানের জুড়ি নেই। জাপান প্রবাসী বন্ধুর মাধ্যমে ২০০টি জাফরানের কন্দ আনিয়েছিলেন তিনি। প্রয়োজনীয় পরিচর্যায় কয়েক মাস পর সুবাস ছড়িয়ে সেই ২০০ কন্দের প্রত্যেকটিতেই ফুল আসে। দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ছয়-আট ইঞ্চি প্রতিটি জাফরান গাছে এক থেকে দুটি গাড় বেগুনি রংয়ের ফুল হয়। জাফরান নিয়ে কথা বলার সময় এমনটাই জানাচ্ছিলেন ড. আ ফ ম জামাল উদ্দীন। সংশ্লিষ্ট এই গবেষক শেকৃবি উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক। তিনি বলেন, ইরানের জাফরান বিশ্ববিখ্যাত। কাশ্মীরি জাফরানও বিশ্ব বাজারে বেশ চাহিদার। আমাদের দেশে জাফরান উৎপাদন হয় না বলে দেশের সব বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট, হোটেল ও মিষ্টান্ন সম্ভারেই কেবল প্রতি বছর ছত্রিশ থেকে চল্লিশ কেজি জাফরান আমদানি করা হয়। যার প্রতি কেজির মূল্য তিন লাখ টাকা পর্যন্ত। এ সংশ্লিষ্ট সার্বিক বিষয়ে কথা বলার সময় ড. জামাল বাংলাদেশ ও বিশ্ব প্রেক্ষিতে জাফরান চাষের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ঝুরঝুরে বেলে-দোআঁশ মাটি জাফরান চাষের উপযোগী। স্বল্প আলোতে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জাফরান ভালো জন্মায়।

 প্রস্তুতকৃত জমিতে কন্দ লাগানোর তিন মাসের মধ্যে জাফরান ফুল সংগ্রহ করা যায়, এ ক্ষেত্রে ফুল ফোটার দিনই ফুল সংগ্রহ করে নিতে হয়। একটি কন্দ থেকে পরবর্তীতে আরেকটি কন্দ হয় এবং প্রতিটি কন্দ বেশ কয়েকবার ব্যবহার উপযোগী। তবে বাংলাদেশে জাফরান নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চাষ করতে হবে। বাংলাদেশ উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে অবস্থিত বলে এখানকার স্বাভাবিক তাপমাত্রা জাফরান চাষের জন্য প্রায় অনুপযোগী। তাছাড়া জলাবদ্ধতা প্রধান বাধা হওয়ায় ড্রিপ ইরিগেশন পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ করলে এ ক্ষেত্রে সুবিধা করা যাবে। সার্বিক দিক খেয়াল রাখলে গ্রিন হাউসের মাধ্যমে দেশে জাফরান সম্পূর্ণ সফলভাবে উৎপাদন সম্ভব বলে জানান শেকৃবির এই গবেষক। তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে দেশে জাফরান চাষ বেশ ব্যয়বহুল। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে জাফরান চাষের লক্ষ্যে কমপক্ষে ২০০০ বর্গফুটের একটি গ্রিনহাউস প্রয়োজন যাতে খরচ হবে সর্বোচ্চ দেড় থেকে দুই কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে সরকার যদি এই সম্ভাবনাময় গবেষণায় বিশেষ অনুদানের ব্যবস্থা করেন, তবে তা আমাদের সম্প্রসারণমূলক গবেষণায় আরেকটি ধাপ উন্মোচিত করবে।

সর্বশেষ খবর