শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভাড়াটে ঘাতক দিয়ে খুন করা হয় আওয়ামী লীগ নেতাকে

আসামির জবানবন্দি

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মনির হোসেন হত্যার নেপথ্যে ছিল একই গ্রামের মমতাজ হোসেন হত্যা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের বিষয়। প্রায় ১৫ বছর আগে তিতাসের মমতাজ হত্যার প্রতিশোধ নিতেই তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম ও অন্যান্য আসামি ৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলে ঘাতক ভাড়া করে এনে খুন করান হাজী মনিরকে। মামলার প্রধান আসামি ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলমকে গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতারের পর গতকাল আদালতে তিনি এমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জালাল উদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যার পরিকল্পনা, ঘাতক ভাড়া করা, হত্যার কারণ ও জড়িত অন্য আসামিদের নাম জানান জাহাঙ্গীর। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই সহিদুল ইসলাম জানান, জাহাঙ্গীর আলম তিতাসের ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মজিদের ছেলে। মামলার অভিযোগ ও ডিবিসূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৪ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিতাসের আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মনির হোসেনকে বাড়ির অদূরে ভাটিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। পরদিন রাতে নিহতের ছেলে আইনজীবী মো. মুক্তার হোসেন নাঈম বাদী হয়ে তিতাস থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় জগত্পুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার কাজী আশেক, নবীর হোসেনসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ জনকে আসামি করা হয়। ২৬ মার্চ মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম জানান, ১৫ বছর আগে তিতাসের ভাটিপাড়া গ্রামের মমতাজ খুন হন।

ওই খুনের নেপথ্যে হাজী মনিরের ভূমিকা ছিল বলে দাবি করেছেন জাহাঙ্গীর। এ ছাড়া আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হাজী মনিরের সঙ্গে এলাকার লোকজনের বিরোধ চলছিল। তাই জাহাঙ্গীর তার ভাই মমতাজ হত্যার প্রতিশোধ নিতে ও এলাকায় হাজী মনিরের আধিপত্য শেষ করতে তার সহযোগীদের নিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা তোলেন। এ টাকা হত্যার মিশনে অংশ নেওয়া ঘাতকদের দেওয়া হয়।

হত্যার আগে ঘাতকরা একাধিকবার গোপন বৈঠকে মিলিত হয়। হত্যার সময় ঘাতকরা ঘটনাস্থল ও আশপাশের কয়েকটি স্থানে অবস্থান নেয়। কয়েক মিনিটেই কিলিং মিশন শেষ করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে নিরাপদে ঘাতকরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, আদালতে ঘাতক জাহাঙ্গীরের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুসারে হত্যার মিশনে অংশ নেওয়া, হত্যার জন্য চাঁদা দাতাসহ অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

 এসব তথ্য যাচাই-বাছাই এবং অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এ মামলায় মমতাজ হোসেনের স্ত্রী বিলকিস বেগমসহ পাঁচজনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর