সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

হাওয়া হয়ে যাচ্ছে টাকা

মির্জা মেহেদী তমাল

হাওয়া হয়ে যাচ্ছে টাকা

হাবিবুর রহমানের জামাতা দুবাই থেকে দেশে টাকা পাঠিয়েছেন। টাকা আসে তার বিকাশ অ্যাকাউন্টে। তিনি চেক করে দেখেন টাকা এসে গেছে। গত পয়লা নভেম্বর হাবিবুর রহমান তার নিজ কর্মস্থল ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে বসে আছেন। হঠাত্ তার মোবাইলে বিকাশের সিগন্যাল দেয়। তিনি মোবাইল ফোনের ডিসপ্লেতে একটি নম্বর দেখেন। তিনি আবারও চেক করতে গেলে আরও একটি নম্বর দেখতে পান। ক্যাশ আউটের সিগন্যাল পান তিনি। তিনি হতবাক। ক্যাশ আউট না করেও এমন সিগন্যাল কেন পাবেন। তিনি চেক করতে গেলে অ্যাকাউন্ট আর ওপেন করতে পারছিলেন না। পরে বুঝতে পারলেন তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে। কিছু সময় পর স্বাভাবিক হলে চেক করে দেখেন, বিকাশে যে পরিমাণ টাকা ছিল, তা হাওয়া হয়ে গেছে। অপরিচিত দুটি নম্বর দিয়ে তার অ্যাকাউন্টের টাকা লুটে নিয়েছে।

পরে হাবিবুর রহমান নিউমার্কেট থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ডায়েরি নম্বর ৩৮। হাবিবুর রহমান বলেন, ‘০১৭৩৫৮৭৮২১৬ নম্বর দিয়ে  ১০ হাজার টাকা এবং ০১৮১৭৬৭২৭২৫ নম্বর দিয়ে আরও প্রায় ৫ হাজার টাকা লুটে নেওয়া হয়। সেদিনই দুবাই থেকে টাকা আসে। কিন্তু দুটি নম্বর দিয়ে টাকা নিয়ে যায়। যা আমি টেরও পায়নি।’ সাভারের আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ী এলাকায় মাত্র ১৩ মিনিটে বিকাশ এজেন্টের অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় ওই এলাকার মডার্ন স্টুডিও অ্যান্ড টেলিকম আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করেছে।

দোকানের মালিক ও বিকাশ এজেন্ট মো. রিপন খান জানান, তার মোবাইল ফোনে তার নবীনগরের বিকাশ লোড অফিস অনুমোদিত প্রতিনিধি নাসিরের নম্বর (০১৭০৯৯১৬৭৬০) থেকে কল আসে। ফোনে তাকে জানানো হয়, নতুন সিস্টেমে এজেন্ট টু এজেন্ট টাকা পাঠানো যাবে। রিপনকে এর জন্য কিছু নির্দেশনা নেওয়ার জন্য ব্যক্তিগত বিকাশ নম্বর থেকে এজেন্ট নম্বরে কল দেওয়ার জন্য বলা হয়।

রিপনও কল দেন। কল পরবর্তী ১৩ মিনিটে ৮ কিস্তিতে ২৫ হাজার টাকা করে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। বিষয়টি বুঝতে পেরে রিপন দ্রুত নবীনগরের স্থানীয় বিকাশ লোড অফিস অনুমোদিত প্রতিনিধি নাসিরের সঙ্গে দেখা করেন। তবে নাসির এ ঘটনা জানেন না বলে জানান। সেখানে থাকা অবস্থাতেই নাসিরের হ্যাক হওয়া মোবাইল নম্বর থেকে রিপনের কাছে কল আসে।

দোকান মালিক ও বিকাশ এজেন্টরা জানতে পারেন, হ্যাকাররা অভিনব পন্থায় বায়োমেট্রিক করা আটটি সিম নম্বর দিয়ে এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে ওই নম্বরগুলোর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সবগুলো নম্বরই বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করা। এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী রিপন স্থানীয় র্যাব অফিসে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

পুলিশ জানায়, শুধু বিকাশ এজেন্টদের নম্বর নয় একটি গ্রুপ জাল বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর