বুধবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দীঘিপাড়া কয়লাখনির সম্ভাব্যতা জরিপ শুরু

সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের দীঘিপাড়ায় আবিষ্কৃত দেশের বৃহৎ কয়লাক্ষেত্র এলাকায় সম্ভাব্যতা জরিপ কাজ শুরু হয়েছে। অব্যাহত জ্বালানি চাহিদা মেটাতে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দীঘিপাড়া কয়লাক্ষেত্র উন্নয়নের সম্ভাব্যতা জরিপ কাজ শুরু হয়েছে। আলোকিত উত্তরবঙ্গ হিসেবে অবদান রাখবে এই দিঘীপাড়া কয়লাক্ষেত্রটি বললেন সংশ্লিষ্টরা। এসব কারণে কয়লাক্ষেত্র এলাকায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিদর্শন এবং কিছু কিছু স্থানে চিহ্ন বিশিষ্ট পিলার স্থাপন করায় স্থানীয় গ্রামগুলোসহ রাস্তার মোড়ে, হাট-বাজারের চা দোকানে সর্বত্র কয়লা উত্তোলনের বিষয়ে নানা আলোচনা চলছে। কয়লাক্ষেত্রটি কবে কয়লাখনিতে পরিণত হবে তা অপেক্ষার বিষয়। তবে কয়লার খনিতে পরিণত হলেই সেটা বাংলাদেশের আরেক সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত রচনা করবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলিয়ে দিয়ে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে- এমনটাই আশা অনেকের। 

আবিষ্কৃত দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার পুঁটিমারা ইউনিয়নের অন্তর্গত দিঘীপাড়া কয়লাক্ষেত্রে সম্ভাবতা জরিপ কাজ আগামী বছর শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়। প্রকল্প পরিচালক খান মো. জাফর সাদিক জানান, দিঘীপাড়া কয়লাক্ষেত্রে সম্ভাব্যতা জরিপ কাজ শুরু হয়েছে। এখানে কি আছে কি নেই, থাকলে কতটুকু আছে, সেটি তোলা যাবে কিনা, তা তুলতে হলে কীভাবে এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ভালোভাবে করা যাবে এসব বিষয় নিয়েই সম্ভাব্যতা জরিপ কাজ চালানো হচ্ছে। তিনি আরও জানান, যেখানে জরিপ চালানো হচ্ছে, সেখানে থাকার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আবার সেখানে শেষ হলে, আরেক জায়গায় যাবেন, এভাবে জরিপ কাজ শেষ করে তারা ফিরে যাবেন। জরিপ চলাকালীন কয়লাক্ষেত্র এলাকায় ৬০টি স্থানে বোরিং করা হবে। এরই মধ্যে ২৫টি স্থানে বোরিং শেষ হয়েছে। আগামী বছরের প্রথমার্ধে শেষ হবে এর জরিপ কাজ। আর সব কিছু জানার জন্যই এই সম্ভাব্য জরিপ।

এদিকে ওইসব এলাকার কেউ বলছেন, এলাকায় থাকা যাবে কিনা। কেউ বলছেন, জমির ক্ষতিপূরণ মূল্য কি পরিমাণ পাব। কোন কোন গ্রাম এর আওতায় থাকবে আবার কোন গ্রাম থাকবে না ইত্যাদি। উল্লেখ্য, দিঘীপাড়া কয়লাক্ষেত্র থেকে কয়লার অনুসন্ধান ও কয়লা উত্তোলনের ব্যাপারে ২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর বাংলাদেশ খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) ও  বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) মধ্যে একটি চুক্তি হয়। জানা যায়, দীঘিপাড়া কয়লাক্ষেত্রের উন্নয়ন হলে এখান থেকে বছরে ৩ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন সম্ভব হবে। সব বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগ দিঘীপাড়া কোল বেসিনের ২৪ বর্গ কি. মি. এলাকার মোট কয়লার পরিমাণ নির্ণয় এবং বেসিনের কেন্দ্রীয় অংশে (১০-১১ বর্গ কি. মি.) ভূগর্ভস্থ পদ্ধতি ব্যবহার করে বছরে ৩ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন খনি উন্নয়নের জন্য বড়পুকুরিয়া খনি কর্তৃপক্ষকে অনুসন্ধান ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়।

১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি) অনুসন্ধান চালিয়ে দীঘিপাড়া কয়লাক্ষেত্রে কয়লা আবিষ্কার করেছিলেন। তারা ওই এলাকায় পাঁচটি কূপ বেশ কয়েক বছর ধরে খনন করে আবিষ্কৃত কয়লাক্ষেত্রটি দেশের সর্ববৃহৎ বলে জানিয়েছিলেন।

সর্বশেষ খবর