বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
রোডমার্চ কর্মসূচি বাতিল

রাজশাহীতে কাল ঐক্যফ্রন্টের জনসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও রাজশাহী

ঘোষণা দিয়েও শেষ পর্যন্ত রোডমার্চ কর্মসূচি বাতিল করল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। মঙ্গলবার বিকালে জনসভায় ঘোষণা দেওয়া হয়, রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চ কর্মসূচি করবে ঐক্যফ্রন্ট। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ শেষে গতকাল বিকাল ৪টার দিকে ড. কামালের বাসভবনেও রোডমার্চ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু এক ঘণ্টার মাথায়  কর্মসূচি বাতিল করা হয়। তবে আগামীকাল যথারীতি জনসভা হবে। এর আগে সংসদ    ভেঙে    দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন, বেগম  খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সাত দফা দাবিতে রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করে ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যাত্রাপথে বেশ কয়েকটি স্থানে পথসভা করারও সিদ্ধান্ত ছিল। দ্বিতীয় দফা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ শেষে এক সংবাদ সম্মেলনেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে আছি। রোডমার্চ কর্মসূচি থাকছে। রাজশাহীতে সমাবেশও হবে। সংলাপ আমাদের আন্দোলনেরই অংশ। যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত। সরকার যদি তা না চায়, তার দায়ভার তাদের। আমরা আমাদের দাবিগুলো নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি।’ এরপর সন্ধ্যায় বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রোডমার্চ কর্মসূচি হচ্ছে না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা রাজশাহীতে আগামীকালের জনসভায় অংশ নেবেন। এটা বিএনপি মহাসচিব আমাকে জানিয়েছেন।’ জানা যায়, রাজশাহীতে আজ রাতযাপন করে আগামীকাল সাহেববাজার গণকপাড়া মোড়ে জনসভা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ কর্মসূচি রেখেছে। এ ছাড়া আজ তফসিল ঘোষণা হলে রবিবার নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। রোডমার্চ না হওয়ার কারণ হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এক নেতা জানান, রোডমার্চের জন্য যে প্রস্তুতি থাকা দরকার, পুলিশি ধরপাকড়ে তা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া শারীরিক অসুস্থতার কারণে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো কোনো নেতা সড়কপথে এত দূর রোডমার্চ করে যেতে না পারায় রোডমার্চ কর্মসূচি বাতিল করে শুধু জনসভা কর্মসূচি রাখা হয়েছে। জনসভার প্রস্তুতি সম্পর্কে রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে অনুমতি পাইনি। এরপর সাহেববাজার গণকপাড়া মোড়ে জনসভা করতে লিখিত অনুমতি চাই। সেখানে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যেও আমরা জনসভা করতে প্রস্তুত রয়েছি।’ রাজশাহীতে কোনো শর্ত ছাড়াই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। গতকাল দুপুরে নগর পুলিশ কমিশনারের দফতর থেকে ঐক্যফ্রন্টকে এ সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। ঐক্যফ্রন্টের চাহিদা অনুযায়ী গণকপাড়া মোড়ে সমাবেশ করতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন নগর বিএনপির দফতর সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন। নগর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম জানান, ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে মাদ্রাসা মাঠ, জিরো পয়েন্ট ও গণকপাড়া চাওয়া হয়েছিল। পরীক্ষার কারণে মাদ্রাসা মাঠ আর ব্যস্ততম এলাকা হওয়ায় জিরো পয়েন্টে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে গণকপাড়া এলাকায় তাদের সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা জানান, রাজশাহীর পর খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহে জনসভা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। কার্যত এসব জনসভার মাধ্যমে নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিয়ে রাখতে চায় তারা।

সর্বশেষ খবর