বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে নেত্রকোনায়

একনেকে ২৮ প্রকল্প অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

নেত্রকোনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। নেত্রকোনা জেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে প্রতিষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ লক্ষ্যে অধিগ্রহণ করা হবে ৫০০ একর জমি। নির্মাণ করা হবে ১০ তলাবিশিষ্ট তিনটি একাডেমিক ভবন, শিক্ষার্থীদের চারটি হল ও প্রশাসনিক ভবন। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্যও থাকবে আবাসনের ব্যবস্থা। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চারটি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এ লক্ষ্যে ২ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, গত দশ বছর সরকার সারা দেশে যে উন্নয়ন করেছে, তাতে আমাদের (আওয়ামী লীগ) বিরুদ্ধে ভোট দিতে জনগণের হাত কাঁপবে। গতকালের একনেক সভা ছিল বর্তমান সরকারের শেষ একনেক সভা। এমন ইঙ্গিত মিলেছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। সভায় প্রধানমন্ত্রী সবার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের নিরলস পরিশ্রমের ওপর ভর করে আমরা দেশের এত উন্নয়ন করতে পেরেছি। আবার দেখা হবে যদি ক্ষমতায় আসতে পারি। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেক সভায় মোট ২৮ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩০ হাজার ২৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ২৪ হাজার ৮৫৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো নিজেদের তহবিল থেকে ব্যয় করবে ৫৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ৪ হাজার ৮৪০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে। একনেকে অনুমোদন পাওয়া সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৬২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

৩ হাজার ৮০৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরে চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ। ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চা বাগান কর্মীদের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ৭৪৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, ৬২৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১টি আধুনিক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্থাপন, ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মাদারীপুরে সরকারি অফিস-সমূহের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪ হাজার ২৮০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সারা দেশে ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২৭৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম-খুলনা-রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পে ১ হাজার ২২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, র‌্যাব ফোর্সের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পে ১ হাজার ৩৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়নে ১ হাজার ৯৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, সোনাগাজী  ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ৭৪৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া বীজ প্রত্যয়ন কার্যক্রম জোরদারকরণ, চট্টগ্রামে ৩৬ পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি চাকুরেদের আবাসিক ফ্ল্যাট, আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ বিশেষ ধরনের পন্টুন নির্মাণ, বৃহত্তর নোয়াখালীর পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, বৃহত্তর রাজশাহীর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, রোহিঙ্গাদের জন্য্য বহুমুখী সেবা প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর