বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

হায়রে পিতা!

মেয়েকে হত্যা করে ফাঁসানোর চেষ্টা পাওনাদারদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

১০ থেকে ১২ লাখ টাকা দেনায় আছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের পানি শাখার কর্মচারী কাজী গোলাম মোস্তফা। দেনা পরিশোধ করতে না পেরে একমাত্র মেয়েকে হত্যা করে পাওনাদারদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মেয়ে সাবিয়া আক্তার অথৈকে (১১) নিজের কর্মস্থল নগরীর সদর রোডের অনামী লেনে বিসিসির পাম্প হাউসে নিয়ে বিষ খাইয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন তিনি। পরে মৃত দেহে বোরকা পরিয়ে সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের সাপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী অথৈর নিথর দেহ ফেলে রাখা হয় স্কুল সংলগ্ন একটি লেবু বাগানে। পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডের তাত্ক্ষণিক কোনো ক্লু না পেলেও অথৈর বাবা বার বার তার পাওনাদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছিলেন। পাওনাদারদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য না পাওয়ায় অথৈর বাবাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে বিসিসির পাম্প চালক কাজী গোলাম মোস্তফা দেনাদারদের ফাঁসাতে তার একমাত্র মেয়ে অথৈকে হত্যার কথা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন।  গতকাল দুপুর ১২টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার কার্যালয়ের হলরুমে সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান বিএমপি কমিশনার মোশারফ হোসেন। তবে মামলা তদন্তের স্বার্থে পাওনাদারদের নাম-পরিচয় জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন পুলিশ কমিশনার। কাজী গোলাম মোস্তফা একাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান পুলিশ কমিশনার মোশারফ হোসেন। এ ঘটনায় নিহতের মা সোহেলী ইসলাম রুমা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মঙ্গলবার রাতে নগরীর কাউনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে কাজী গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার দেখিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণের জন্য গতকাল দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

 গত মঙ্গলবার সদর উপজেলার চড়বাড়িয়া ইউনিয়নের সাপানিয়া এলাকায় একটি লেবুবাগান থেকে শ্বাসরোধে হত্যার শিকার অথৈর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে অথৈর লাশ ওই দিনই তাদের পরিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর