সোমবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নির্বাচনে প্রার্থীদের টিআইএনের প্রয়োজন নেই : এনবিআর

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর-টিআইএন ও কর পরিশোধের প্রত্যয়নপত্র নির্বাচন কমিশন-ইসিতে দাখিলের বাধ্যবাধকতা নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসাইন ভূঁইয়া। এক্ষেত্রে ইসি যে ঘোষণা দিয়েছে, সেখানে এনবিআরের কিছু বলার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার প্রার্থীদের প্রশ্ন করা হবে না। তবে নতুন সরকার গঠনের পর আগামীতে যারা জনপ্রতিনিধি হতে চাইবেন, তাদের টিআইএন ও রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচার রাজস্ব ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এতে উপস্থিত ছিলেন— এনবিআর সদস্য ও আয়কর মেলার আহ্বায়ক জিয়া উদ্দিন মাহমুদ, সদস্য কানন কুমার রায় প্রমুখ। আজ সেরা করদাতাদের সম্মাননা প্রদান ও আগামীকাল দেশব্যাপী আয়কর মেলার উদ্বোধন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এবার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া ক্যাটাগরিতে শীর্ষ করদাতা হিসেবে সম্মাননা পাবে দেশের শীর্ষ শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড। এ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’-এর সম্পাদক নঈম নিজাম সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে সেরা করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসাইন ভূঁইয়া বলেন, আমরা মন্ত্রিসভায় আলোচনা করেছিলাম। সেখানে কথা হয়েছে যে, নির্বাচনের প্রাক্কালে টিআইএন বাধ্যবাধকতা করা হলে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই নির্বাচন কমিশন যে ঘোষণা দিয়েছে, সেখানে আমাদের কিছু বলার নেই। যারা নির্বাচন করবেন, তাদের মধ্যে যারা কর প্রদান করছেন বা করবেন, তাদের পেছনে এখন এনবিআর দৌড়াবে না। নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্ক হোক, এটা এনবিআর চায় না। এক্ষেত্রে আয়কর আইনে যেভাবে আছে, সেভাবেই থাকবে। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকে দুর্নীতির কোনো অভাব নেই। আয়কর বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে দুদকের একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দুদকের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি। দুদকের এমন দুর্নীতির অনেক ক্ষেত্র আছে। তাদেরও দুর্নীতি আছে। মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে করদাতার সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০ লাখে উন্নীত করতে চাই। একই সঙ্গে প্রতি বছর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ৩৫ লাখে নিতে চাই। দেশে বর্তমানে ২০ লাখ করদাতা রিটার্ন দাখিল করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার ‘উন্নয়ন ও উত্তরণ, আয়করের অর্জন’— স্লোগানকে সামনে রেখে আয়কর মেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় আয়কর দিবস সামনে রেখে আজ রাজধানীর একটি হোটেলে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত সেরা করদাতাদের ট্যাক্স কার্ড প্রদান ও সম্মাননা জানাবে এনবিআর। আর আগামীকাল ১৩ নভেম্বর সকাল ৯টায় বেইলী রোডের অফিসার্স ক্লাবে আয়কর মেলার উদ্বোধন করা হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এনবিআর জানিয়েছে, সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিত এ মেলায় করদাতারা ২০১৮-২০১৯ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। সহজে রিটার্ন দাখিলের জন্য ঢাকার আয়কর মেলায় প্রতিটি কর অঞ্চলের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। মেলায় রেজিস্ট্রেশন বুথে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান সাপেক্ষে নতুন করদাতারা রেজিস্ট্রেশন ও বর্তমান (পূরনো টিআইএনধারী) করদাতারা রি-রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। এ ছাড়া ই-পেমেন্ট ওয়েবসাইট ব্যবহার করে করদাতারা অনলাইনে কর পরিশোধ করতে পারবেন। মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা, প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য মেলায় পৃথক বুথ থাকবে। মেলায় স্থাপিত সোনালী ও জনতা ব্যাংকের বুথে করদাতারা আয়কর জমা দিতে পারবেন। করদাতাদের জন্য মেলা প্রাঙ্গণে আয়কর রিটার্ন, ই-টিআইএন আবেদন ফরম এবং চালান ফরম সরবরাহ করা হবে। করদাতাদের সুবিধার্থে মেলায় হেল্প ডেস্ক, তথ্য কেন্দ্র ও আয়কর অধিক্ষেত্র সংক্রান্ত বুথ থাকবে। করদাতাদের সুবিধার জন্য থাকবে ফটোকপির ব্যবস্থা।

সর্বশেষ খবর