সোমবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি

নদীতীরে পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষ

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নদীতীরে পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষ

ছোট যমুনা নদীর তীরের একটি গ্রাম কুজাইল। সেই গ্রামের একজন সফল নারী সানজিদা। নদীর তীরে পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষ করে আর্থিকভাবে   স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি। স্বামীর পাশাপাশি তিনিও নিজের সংসারে ভূমিকা রাখছেন। তার দেখাদেখি উৎসাহিত হচ্ছেন আশপাশের নারীরাও। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কুজাইল গ্রামে ছোট যমুনা নদীর তীরে গেলে চোখে পড়বে সবুজে ঘেরা সবজি খেত। খেতের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে পিয়াজ, রসুন, আলু, ধনিয়া, মরিচ ও মুলার গাছসহ নানা সবজির গাছ। প্রায় তিন বছর আগে সানজিদা পার্শ্ববর্তী এক কৃষকের সবজি চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হন। পুরুষেরা পারলে মেয়েরা কেন পারবে না এই ইচ্ছা শক্তি থেকে সানজিদাও শুরু করেন নদীর তীরে স্বামীর পরিত্যক্ত প্রায় ১৫ শতাংশ জমিতে সবজির চাষ। সানজিদা বলেন, এক সময় সংসারের কাজকর্ম শেষ করার পর অলস সময় কাটাতাম। পাশের এক কৃষক নদীর তীরে তার জমিতে বছরের পুরো সময় কোনো না কোনো সবজি চাষ করত। তখন আমার মনে একটি জেদ কাজ করল যে পুরুষরা পারলে আমি পারব না কেন। তখন আমার স্বামীর সহযোগিতা নিয়ে শুরু করি সবজি চাষ। সবজি চাষের প্রথম বছরে বাজারে আমার জমির মুলা সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। এখন আমি নিজেদের প্রয়োজন পূরণ করে স্থানীয় বাজারে এই সবজি বিক্রি করে প্রতি মাসে ৫-৬ হাজার টাকা আয় করছি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমি এই সবজি চাষের পরিসরটাকে আরও বৃদ্ধি করতে পারব। ওই গ্রামের হালিমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করে। সংসারে এক সময় অভাব-অনটন লেগেই থাকত। সানজিদা আপার পরামর্শে আমিও আমার বাড়ির উঠানে অল্প অল্প করে শিম, লাউ, পালং শাকসহ নানা সবজি চাষ করছি। এখন আমার সংসারের জন্য বাজার থেকে তেমন সবজি কিনতে হয় না। সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে আমি অতিরিক্ত সবজিগুলো বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, আমি সানজিদা আপার সবজি খেতসহ অন্যান্য মহিলার সবজি খেত পরিদর্শন করেছি। আসলেই তাদের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। দেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের মহিলারাও পুরুষের পাশাপাশি ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন। সানজিদাসহ যে কেউ কৃষি সম্পর্কিত সহযোগিতা ও পরামর্শ চাইলে আমরা দিতে প্রস্তুত।

 

সর্বশেষ খবর