সোমবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
মির্জা আজমের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

আওয়ামী লীগ নেতা রেজনু ও ছাত্রদল নেতা জিলানীর ফোনালাপ ফাঁস

জামালপুর প্রতিনিধি

বিভিন্ন অঞ্চলে আওয়ামী লীগ নেতারা তৈরি হচ্ছেন আওয়ামী লীগের বিপক্ষে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুরের জনপ্রিয় রাজনীতিক, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়িয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ব্যবসায়ী নেতা রেজাউল করিম রেজনু এমন অভিযোগ উঠেছে।

ঐক্যজোটের কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ আসনের অপ্রতিরোধ্য এমপি প্রার্থী, পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি মির্জা আজমকে ফেল করানো যাবে—এ নিয়ে জামালপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান জিলানীর সঙ্গে রেজাউল করিম রেজনুর ফোন কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে আওয়ামী পরিবারেও শুরু হয়েছে তোলপাড়।

এই অডিও ফোনালাপে স্পষ্ট হয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম রেজনু ছাত্রদল নেতা জিলানীর কাছে জানতে চান মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ আসনে কাকে মনোনয়ন দিলে মির্জা আজমের      বিরুদ্ধে জিততে পারবেন। ফোনালাপে উঠে এসেছে বিএনপির সাবেক নেতা নঈম জাহাঙ্গীর প্রসঙ্গ। নঈম জাহাঙ্গীর বিএনপি থেকে সরে গিয়ে এলডিপিতে থাকেন কিছুদিন। সম্প্রতি তিনি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্যে যুক্ত হয়ে কাজ করছেন। তবে তিনি এবার বিএনপি থেকেই মনোনয়নপত্র কিনেছেন। রেজনুর ফোনালাপে ওই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের কেন্দ্রীয় জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের পরিবর্তে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক বিএনপি নেতা নঈম জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে পারলে মির্জা আজমকে হারাতে সহজ হবে কি না রেজনু সেই প্রশ্নই করেছেন ছাত্রদল নেতা জিলানীকে। জবাবে জিলানী চট করে রেজনুকে বলেন, ‘মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল কিন্তু মির্জা আজমের সঙ্গে কুলাব না।’ রেজনু জানতে চান, ‘কোন ক্যানডিডেট বেটার ক্যানডিডেট (কোন প্রার্থী তুলনামূলক ভালো)। মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, না নঈম জাহাঙ্গীর?’ জিলানী বলেন, ‘নঈম জাহাঙ্গীর বেটার হবে।’ তখন রেজনু জানতে চান, ‘তুই কি গ্রুপিংয়ের কারণে কইতাছস নাকি?’ জবাবে জিলানী বলেন, ‘না না না, গ্রুপিংয়ের জন্য না। তর অনু সবগুলা ঐক্যবদ্ধ হবো মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলেরে ফেল করানোর লাইগ্যা। মির্জা আজমের সঙ্গে হাত মিলাবো, অরে (মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল) নমিনেশন দিলে। আর সেই জায়গায় অরে যদি না দেয় তাইলে এরা সব আবার একত্রিত হয়া ঝাঁপায়া পড়বো।’ রেজনু আবার প্রশ্ন করেন, ‘এক হয়ে কি নঈম জাহাঙ্গীরকে বাইর কইরা নিয়া আসার অ্যাবিলিটি আছে?’ জিলানী বলেন, ‘অনু তো আসলে সো টাফ। বাস্তবতাটা হলো...।’ রেজনু বলেন, ‘আমি তরে একটা কথা বলি। আই ওয়ান্ট টু স্পিক ইউ। বিএনপি জয়েন্টলি মার্চ কইরা সব শক্তি দিয়াও যদি নঈম জাহাঙ্গীরের পক্ষে কাজ করে? মির্জা আজমের অ্যাগেইনস্টে পাবো?’ জবাবে জিলানী বলেন, ‘হ্যাঁ পাবো।’ এরপর আরও কিছু কথা হয় তাদের দুজনের মধ্যে। ফোনালাপের শেষের দিকে জিলানীকে দুটি আসন ঘুরে এসে সর্বশেষ পরিস্থিতির একটা সামারি জানানোর কথা বলে রেজনু বলেন, ‘তর আর আমার ওপর ডিপেন্ড করবে ইলেকশন। এইটা তরে কয়া রাখলাম।’

সর্বশেষ খবর