মঙ্গলবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মধ্যম সারির কর্মকর্তারাও পাবেন ৩০ লাখ টাকা গাড়িঋণ সুবিধা

মাসে মেইনটেন্যান্স খরচ ৪৫ হাজার

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সহকারী মহাব্যবস্থাপক পর্যায়ের মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের জন্যও কার লোন সুবিধা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালা করা হয়েছে যেখানে প্রাধিকার বা অপ্রাধিকারপ্রাপ্ত উভয় ধরনের কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার জন্য সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা ঋণ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আর গাড়ির জ্বালানি, চালকের বেতনসহ  মেইনটেন্যান্স বাবদ দেওয়া হবে প্রতি মাসে আরও ৪৫ হাজার টাকা। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী কার লোনে কেনা গাড়িটি দুর্ঘটনায় বিনষ্ট বা চুরি হয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মেইনটেন্যান্স ব্যয় পাবেন। খসড়া এই নীতিমালাটির শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘রাষ্ট্র মালিকানাধীন, বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য কার লোন এবং কার মেইনটেন্যান্স ব্যয় পুনর্ভরণ সম্পর্কিত খসড়া নীতিমালা। এটি চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ২৮ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে একটি সভা আহ্বান করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। খসড়া নীতিমালায় প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলতে মহাব্যবস্থাপক বা তার উপরের কর্মকর্তাদের বোঝানো হয়েছে। আর অপ্রাধিকারভুক্ত কর্মকর্তা বলতে সহকারী       মহাব্যবস্থাপক বা তার সমমান এবং উপমহাব্যবস্থাপক বা তার সমমান কর্মকর্তার কথা উল্লেখ রয়েছে। জানা গেছে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে উপমহাব্যবস্থাপক বা তার উপরের কর্মকর্তারা কার লোন সুবিধা পেয়ে থাকেন। নতুন নীতিমালায় সহকারী মহাব্যবস্থাপকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হলো। তবে নীতিমালা অনুযায়ী প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অর্থাৎ মহাব্যবস্থাপক বা তার উপরের কর্মকর্তাদের কার লোন হবে সুদমুক্ত; আর অপ্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অর্থাৎ সহকারী মহাব্যবস্থাপক বা উপমহাব্যবস্থাপকদের গাড়ির জন্য ঋণের ওপর ব্যাংক রেটে সুদ দিতে হবে।

রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বিডিবিএল, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাকাব, হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন, আইসিবি, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা এই সুবিধা পাবেন। জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি প্রদীপ কুমার দত্ত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারি ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক বা তার উপরের পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের জন্য আগে থেকেই গাড়ি কেনার জন্য ঋণের সুযোগ রয়েছে। ব্যাংকগুলো এর বিপরীতে তাদের কর্মকর্তাদের গাড়ি ব্যবহারের জন্য মেইনটেন্যান্স খরচও বহন করে। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি কাজী আলমগীর জানান, বর্তমানে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক বা তার উপরের কর্মকর্তাদের জন্য গাড়ি কেনার ঋণের সিলিং নির্ধারিত হয় কর্মকর্তার পদমর্যাদা অনুযায়ী, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ও সেভাবে নির্ধারিত হয়। অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম সুস্মিতা মণ্ডল জানান, বর্তমানে কর্মকর্তার পদমর্যাদা অনুসারে ২২ থেকে ৩৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কার লোন পাওয়া যায়। আর গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে মেইনটেন্যান্স খরচ পাওয়া প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা। গত বছর সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য যে কার লোন নীতিমালা করা হয়েছে সেখানে গাড়ি কেনার জন্য সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা ঋণ সুবিধা রাখা হয়েছে। আর মেইনটেন্যান্স খরচ ধরা হয়েছে প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা। আর খসড়া নীতিমালায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জন্য কার লোনের সর্বোচ্চ সিলিং ধরা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা, মেইনটেন্যান্স ব্যয় প্রতি মাসে ৪৫ হাজার টাকা। নীতিমালা অনুযায়ী সার্বক্ষণিক গাড়ি সুবিধা ভোগকারী প্রাধিকারপ্রাপ্ত নির্বাহীরা পিআরএলকালীন সময়েও মেইনটেন্যান্স ব্যয় পাবেন। এমনকি গাড়িটি চুরি বা নষ্ট হয়ে গেলেও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। তবে কোন কারণে বাধ্যতামূলক অবসর বা স্বেচ্ছা অবসর বা কোনো কারণে চাকরির অবসান বা মৃত্যুবরণের ক্ষেত্রে মেইনটেন্যান্স ব্যয় পুনর্ভরণ করা হবে না। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত কোনো কর্মকর্তা এ ধরনের ঋণ সুবিধা পাবেন না।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর