বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভোটের যত হিসাব- নিকাশ

জোটের সমীকরণে চট্টগ্রামে কপাল পুড়তে পারে জনপ্রিয়দের

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট-মহাজোট এবং ভোট সমীকরণে চট্টগ্রামে কপাল পুড়তে পারে তৃণমূলের অনেক জনপ্রিয় নেতার। জোটের শরিকদের আসন ভাগাভাগি করতে গিয়ে মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী। তবে জোট সমীকরণে মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও জোট সমর্থিত প্রার্থীর হয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।

ফটিকছড়ি থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম, হাটহাজারী আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা এবং চান্দগাঁও থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী আবদুচ সালাম প্রায় অভিন্ন সুরে বলেন, ব্যক্তির চেয়ে দল ও জোট বড়। জোট  থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। জানা যায়, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে মহাজোটের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, আওয়ামী লীগের এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম, খতিজাতুল আনোয়ার সনিসহ ২৫ নেতা। জোটের সমীকরণে নজিবুল বশর ফের মহাজোটের টিকিট পেলে বঞ্চিত হতে পারেন আওয়ামী লীগের নেতারা। চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে মহাজোটের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, আওয়ামী লীগের এম এ সালাম, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, ইউনুস গনি চৌধুরী এবং মাহমুদ সালাহ উদ্দিন চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন নেতা। এ ছাড়া একই আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী। জোট সমীকরণের ব্যারিস্টার আনিসের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভোট রাজনীতি ও জোটের সমীকরণে মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন আওয়ামী লীগের অনেকেই। একই আসনে অভিন্ন সমস্যায় রয়েছে ২০ দলীয় জোটেও। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা, এস এম ফজলুল হক, ব্যারিস্টার মীর হেলাল। একইভাবে ২০ দলীয় জোট থেকে মনোনয়ন চান কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ ইব্রাহিম। একজন প্রার্থীকে জোট থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে কপাল পুড়বে বাকি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের। চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে মহাজোট থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ বেশ কয়েকজন নেতা। একই আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ। সারা দেশের হেফাজতে ইসলামের ভোটব্যাংকের কথা চিন্তা করে মহাজোটের সঙ্গে কওমি মতাদর্শীদের একটা সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে হেফাজতে ইসলামের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা মুফতি ফয়জুল্লাহকে সমর্থন দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মহাজোটের। এতে কপাল পুড়তে পারে আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদের। চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে এবার মহাজোটের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জাসদের কার্যকরী সভাপতি মাঈনউদ্দিন খান বাদল, আওয়মী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, আবদুচ ছালামসহ বেশ কয়েকজন। জোটের সমীকরণে এ আসনে কপাল পুড়তে পারে আওয়ামী লীগ নেতাদের। চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে মহাজোটের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম বিএসসি, পেশাজীবী নেতা রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, ছগীর আহমেদ, তারেক সোলায়মান সেলিমসহ ২৬ জন নেতা। কিন্তু এ আসনেও ভাগ বসাতে পারে মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি। এ আসন থেকে মহাজোটের সমর্থন পাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর। চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়লী-হালিশহর-খুলশী) আসনে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীদের সবাই হেভিওয়েট। এ আসন থেকে প্রার্থী হতে চান সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল্লাহ আল নোমান এবং জামায়াতের শাহজাহান চৌধুরী। এ আসনে মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন যে কোনো দুজন। চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসন থেকে মহাজোটের মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এবং মুজিবুর রহমানসহ ১২ নেতা। মহাজোটের আসন বণ্টনে এ আসনও চলে যেতে পারে জাতীয় পার্টির হিস্যায়। তাই কপাল পুড়তে পারে বর্তমান সংসদ সদস্যসহ অন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের। একইভাবে ২০ দলীয় জোট থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, জামায়াতের জহিরুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় নেতা। জোট সমীকরণে এ আসনে প্রার্থী হতে পারেন জামায়াতের জহিরুল ইসলাম।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর