বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি

টমেটো গাছের রহস্যজনক মৃত্যু

বাগেরহাট প্রতিনিধি

টমেটো গাছের রহস্যজনক মৃত্যু

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় কৃষকদের শত শত একর জমির ফলন্ত টমেটো গাছ ‘স্ট্রোক’ করে মারা যাচ্ছে। ভালো ফলন ধরার পর পরই খেতগুলোর গাছে হঠাৎ করে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এটি এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। চিতলমারী উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনন্দ বিশ্বাস     এবলেন, চিতলমারীতে এ বছর ১ হাজার ৫০০ একর জমিতে চক্র, পানপাতা, মিন্টু সুপার, লাভলী, হাইটম ও বিউটিসহ উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর চাষ করেছিলেন চাষিরা। ভালো ফলন ধরার পর পরই টমেটো গাছ হঠাৎ মহামারী আকারে স্ট্রোক রোগে আক্রান্ত হয়ে মরে যাচ্ছে। এটি মাটিবাহিত ব্যাকটেরিয়া সংক্রান্ত রোগ। এ রোগ গাছের শিকড় একেবারেই নষ্ট করে ফেলে। টমেটোর চারা লাগানোর আগে চাষিরা ভালো করে মাটি পরিশোধন না করার কারণে খেতে মহামারী আকারে স্ট্রোক রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।

চিতলমারী উপজেলা সদর বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে কুরমনি গ্রামে টমেটো চাষি অনুপ বিশ্বাস (৩৫) বলেন, ‘শীতকালীন আগাম সবজি হিসেবে ৩ লাখ টাকা ঋণ করে এক একর জমিতে টমেটোর গাছ লাগিয়েছিলাম। কঠোর পরিশ্রম ও পরিচর্যায় গাছগুলোতে প্রচুর টমেটো ধরেছিল। আশা ছিল এ বছর টমেটো বিক্রি করে সব ধারদেনা পরিশোধ করব। কিন্তু সব ফলন্ত টমেটো গাছই শেষ পর্যন্ত স্ট্রোক করে মারা গেছে। এখন ঋণের টাকা তো দূরের কথা, পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচাটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ চিতলমারী উপজেলার কুরমনি, সুরশাইল, পাটরপাড়া, সাবোখালী, দানোখালী, পাঁচপাড়া, শ্যামপাড়া, খড়মখালী, উমাজুড়ি, খলিশাখালী, গরিবপুর, ডাকাতিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের টমেটো চাষি কিশোর রায়, জোতিন পোদ্দার, শষধর রায়, সুকেশ বাড়ৈ, অসীম বসু, তারেক বিশ্বাস, শামসুর রহমান, মাহফুজ হাওলাদার, কামরুল ফকির, আজমল বিশ্বাস, নিখিল বড়াল, তরুণ সরকার, অমলেশসহ অনেকে নিজেদের দুঃখের বর্ণনা দিয়ে জানান, এ বছর হঠাৎ করে স্ট্রোক করে তাদের শত শত একর জমির ফলন্ত টমেটো গাছ মরে যাওয়ায় তারা একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। টমেটো চাষিদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডই ভেঙে গেছে।

 

সর্বশেষ খবর