শনিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শচীনের সুরের মুগ্ধতা

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

শচীনের সুরের মুগ্ধতা

বিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় বাংলা ও হিন্দি গানের কিংবদন্তিতুল্য ও জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক, সুরকার ও গায়ক শচীন দেব বর্মণ। নিজের সৃষ্টি কালজয়ী অসংখ্য গানের মধ্য দিয়ে এদেশের সংগীতাঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছেন শচীন দেব বর্মণ। লোকসংগীত, আধুনিক ও চলচ্চিত্র সব ধরনের গানেই নিজের মুন্সিয়ানা তুলে ধরে সংগীতপিপাসুদের আলোড়িত করেছেন গানের এই শৈল্পিক কারিগর। উপমহাদেশের কিংবদন্তি এই সংগীতজ্ঞকে স্মরণে তারই কালজয়ী গানে গানে রাজধানীর কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে সুরের ঢেউ তুললেন বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীরা। অমর এই সুরস্রষ্টার সুরের মূর্ছনা ছড়িয়ে দিয়ে হেমন্তের সন্ধ্যাকে উপভোগ্য করে তুললেন তারা। বাংলার সঙ্গে হিন্দি, লোকগানের সঙ্গে আধুনিক ও চলচ্চিত্রের গানে শচীন দেব বর্মণকেই মূর্ত করে তুললেন শিল্পীরা। গানের সুরের সঙ্গে নাচের মুদ্রার অনন্য সেতুবন্ধনে অনন্য এক ভালোলাগা শিল্পের সন্ধ্যা সৃষ্টি হলো অনুষ্ঠানস্থলে। গতকাল সন্ধ্যায় এমন দৃশ্যকল্পই চিত্রিত ছিল তিন দিনের ‘শচীন দেব বর্মণ সঙ্গীত উৎসব’-এর প্রথম দিনে। সংগীতের এই কিংবদন্তি স্মরণে এ উৎসবের আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিক সংগঠন বহ্নিশিখা। সন্ধ্যায় এ উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অতিথি ছিলেন গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফকির আলমগীর, আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শাহ এ সারওয়ার প্রমুখ।

 ও ঢাকাস্থ ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক ড. নীপা চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে আয়োজক সংগঠনের শিল্পীরা।

এরপর সম্মিলিত কণ্ঠে তারা পরিবেশন করে ‘তুমি আর নেই সে তুমি’ ও ‘নিটল পায়ে রিনিক ঝিনিক’ এই দুটি গান। এরপর একক কণ্ঠে তানসেন রহমান গেয়ে শোনান ‘রাতের আতরে’ ও ‘কে যাসরে’। একক কণ্ঠে আরও সংগীত পরিবেশন করেন চন্দনা মজুমদার ও সন্দীপন। বাংলাদেশের শিল্পীদের পরিবেশনা শেষে মঞ্চে আসেন ভারতের আসামের আমন্ত্রিত শিল্পী মঞ্জুশ্রী দাস। সুকণ্ঠী ও প্রিয়দর্শিনী এই শিল্পী মঞ্চে এসে বাংলা ও হিন্দি গানের মিশেলের অনন্য ফিউশনে শ্রোতাদের সুরের চাদরে ঢেকে দেন। বর্ণে-গন্ধে-ছন্দের সঙ্গে গানটির হিন্দি ভার্সন ‘পুলকে রাঙছে’, ‘ও বন্ধু রঙিলা রঙিলা রঙিলারে’ গানের সঙ্গে এর হিন্দি ভার্সন ‘তাদবির ছে বিগরি’ ‘বাঁশি শুনে আর কাজ নেই’ এর হিন্দি ভার্সন ‘নিন চুরায়ে চায়না চুরায়ে’, ‘কি যে করি এই মন নিয়া’ হিন্দি ভার্সন ‘তু ন্যাও রঙিলা ক্যায়সে জাদু কিয়া’ বাংলা ও হিন্দি গানের মিশেলে অনুষ্ঠানে আগতদের মাঝে মুগ্ধতা ছড়ান আসামের এই শিল্পী। এ ছাড়া তিনি আরও পরিবেশন করেন ‘তুমি এসেছিলে পরশু কাল কেন আসোনি, ঝিলমিল ঝিলমিল ঢেউয়ের জলে, নিশিথে যাইও ফুলবনে, যদি সময় থাকে, শোন গো দখিনাও হাওয়া’, নজরুলের ‘চোখ গেলো চোখ গেলো’। সুরের জাদুতে শ্রোতাদের হৃদয়ের গভীরে দাগ কেটেই মঞ্চ ছাড়েন মঞ্জুশ্রী দাস। এরপর নাচ নিয়ে মঞ্চে আসে আসামের শিলচরের সৌমিত্র শংকরের নাচের দল ‘ড্যান্সার সার্কেল’। ‘নৃত্যের ছন্দে শচীনকর্তা’ শিরোনামের নাচ দিয়ে অনুষ্ঠানে এস ডি বর্মণকে মূর্ত করে তোলেন এই নাচের দলটি। রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের গানের অনুকরণের সুর, লোকগান ও শচীন দেব বর্মণের বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের গানে গানে নাচের এ পর্বটি সাজান সৌমিত্র শংকর। গানের সুরের সঙ্গে নাচের মুদ্রায় নাচের মধ্যে গল্প বুনে যান আসামের এই নাচের দলটি। আগামীকাল একই মিলনায়তনে শেষ হবে বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের অংশগ্রহণের তিন দিনের এ উৎসব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর