রবিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

খুনিরা ছিল বোনের উত্ত্যক্তকারী

আলী আজম

সিগারেট ধরালি ক্যান? সিগারেট ধরিয়েছি তো কি হয়েছে? কি হয়েছে মানে? তোর এত সাহস তুই আমার সামনে সিগারেট ধরাস! এভাবে সিনিয়র-জুনিয়র দুজনের তর্কের উত্তাপ বাড়তে থাকে। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে সিনিয়র পাভেলকে জুনিয়র তুহিন ছুরিকাঘাত করে। তুহিনের সঙ্গে থাকা এরফান, মাসুম এবং রাব্বিও যোগ দেয়। মাসুমও পাভেলকে ছুরিকাঘাত করে। রাব্বি পাভেলকে ধরে রাখে আর এরফান সহযোগিতা করে। এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি-লাথি এবং ছুরিকাঘাতে নিহত হয় পাভেল।

ঘটনাটি ঘটে গত ৩ নভেম্বর রাজধানীর জুরাইন        মাজারগেট এলাকায়। পরদিন ৪ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পাভেল। ৬ নভেম্বর নিহতের বাবা মনির হোসেন বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামি করে শ্যামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় তুহিন, এরফান, মাসুম ও রাব্বির নাম উল্লেখ করা হয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন পাভেল হত্যা মামলার আসামিরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিহত শেখ ইসলাম পাভেল সিকদারের ছোট বোন কলেজে পড়ছে। তাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত এলাকার বখাটে তুহিন। তাকে একাধিকবার নিষেধও করেছে পাভেল। কিন্তু বখাটে তুহিন এটা মানতে পারেনি। সে এলাকায় জুনিয়র গ্রুপ নিয়ে চলাফেরা করত। আর পাভেল ছিল সিনিয়র। ঘটনার দিন পাভেলের সামনে সিগারেট ধরায় তুহিন। অভিযোগ, এতে ক্ষিপ্ত হলে পাভেলকে হত্যা করে তুহিন ও তার সহযোগী এরফান, মাসুম ও রাব্বি।

পাভেলের স্ত্রী মারিয়ার ভাষ্য মতে, তার সামনেই তার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করে বখাটেরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা পুলিশকে বলেছে, পাভেলের বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করার কারণে নয়, এ হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে। তবে পাভেলের স্বজনরা বলছেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে খুনিরা পাভেলকে হত্যা করে। পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, পাভেলকে যেদিন ছুরিকাঘাত করা হয়, এর পরদিন বাসযোগে চট্টগ্রাম যায় চার বখাটে। ভেবেছিল, অপরিচিত স্থানে যেহেতু কেউ চেনে না, তাই গা ঢাকা দেওয়া সহজ হবে। তারা চারজনই শুরুতে স্থানীয় একটি খাবারের হোটেলে বয়ের কাজ নিয়েছিল। সকালের শিফটে তুহিন, রাব্বি ও মাসুম এবং রাতের শিফটে এরফান। কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হয়নি।

সর্বশেষ খবর