বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি

ভোলায় নারীরা শিখছেন ফলমূল চাষ

জুন্নু রায়হান, ভোলা

ভোলায় নারীরা শিখছেন ফলমূল চাষ

ভোলায় প্রত্যন্ত গ্রামের নারীরা শিখছেন সবজি ও ফলমূল চাষের কলাকৌশল। চাষাবাদে শুধু পুরুষ নয়, নারীরাও আর পিছিয়ে থাকবেন না— এমন প্রত্যয় নিয়ে তারা সক্রিয় হয়েছেন। আর এ উদ্যোগে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগ বলছে, রক্ষণশীলতার কারণে ভোলার নারীরা কখনই মাঠে চাষাবাদের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন না। সম্প্রতি সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে নারীরা চাষাবাদের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হচ্ছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় বর্তমানে ‘গ্রামীণ নারীদের সবজি ও ফল-ফলারি উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণের দক্ষতা বাড়িয়ে তাদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি ও পরিবারের সদস্যদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার’ লক্ষ্য নিয়ে ওয়ালমার্ট ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে আন্তর্জাতিক সার উন্নয়ন কেন্দ্র ভোলা, বোরহানউদ্দিন ও চরফ্যাশন উপজেলার ৩৬টি গ্রামে নারীদের চাষাবাদে সম্পৃক্ত করতে কাজ করছে। ‘সবজি উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ’ (এভিপিআই) প্রকল্পের আওতায় নারীদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের ফিল্ড মনিটরিং অফিসার কৃষিবিদ এ এম জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, কৃষাণীদের আর্থ-সামাজিক, পারিবারিক উন্নতির লক্ষ্যে মাটির গভীরে গুটি সার প্রয়োগ প্রযুক্তি গ্রহণ এবং ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। এতে উন্নতমানের বীজ, সুষম সার ও ভালো সেচ ব্যবস্থাপনার বিচক্ষণ প্রয়োগ ও ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরও জানান, ভোলায় এ পর্যন্ত ৩৬টি গ্রামে ৪ হাজার ৫৬৩ জন কৃষাণীকে প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি ২ হাজার ৪৫০ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুরনো কৃষাণীকে নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণ সভা, মাঠ প্রদর্শনী, কর্মশালা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, এভিপিআই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষাণীদের প্রশিক্ষণের ফলে সবজি ও ফলমূল চাষে গুটি সারের ব্যবহার প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে সারের সাশ্রয় হচ্ছে এবং কৃষাণীরা অধিক ফলন পাচ্ছেন। চরফ্যাশন উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনতোষ শিকদার বলেন, সবজি চাষে গুটি সার ব্যবহারের পাশাপাশি তরমুজে ও ভোলার অর্থকরী ফসল সুপারি, নারিকেল গাছে এর ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে বেশি ফলন দেওয়ার পাশাপাশি গাছগুলো দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে। প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষাণীরা সবজি ও ফলমূল চাষের উন্নত জ্ঞানের পাশাপাশি বাজারজাতকরণের ধারণাও পাচ্ছেন। সূত্র জানায়, জেলার ৩৬টি গ্রামের ৪ হাজার ৫০০ নারী এখন সবজি ও ফলমূল চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পাশাপাশি ২ হাজার ৪৫০ জন প্রশিক্ষিত নারী অন্য নারীদের সবজি ও ফলমূল চাষে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন। এতে দিন দিন চাষাবাদে নারীর সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর