বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকিতে শীর্ষ ১০-এ বাংলাদেশ

প্রতিদিন ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকার শীর্ষ দশে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। প্রকাশিত শীর্ষ ১৫টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান নবম স্থানে। সূত্র : অনলাইন।

একাধারে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা, হিমালয়ের বরফ গলার কারণে নদীর দিক পরিবর্তন, বন্যা— সবদিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং হচ্ছে বলে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় শীর্ষ দশে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সর্বোচ্চ ঝুঁকির মধ্যে থাকা এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ভানুয়াতু। অন্যদিকে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সবচেয়ে কম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কাতার। ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে ৯টি বিভিন্ন দ্বীপদেশ। জার্মানির রুহর বিশ্ববিদ্যালয় বোখাম এবং ডেভেলপমেন্ট হেল্প অ্যালায়েন্স নামে একটি জার্মান বেসরকারি মানবিক সংস্থা যৌথভাবে এই গবেষণা পরিচালনা করে। ২০১৮ বিশ্ব ঝুঁকি প্রতিবেদনে ১৭২টি দেশের ভূমিকম্প, সুনামি, হারিকেন এবং বন্যার ঝুঁকি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এসব দুর্যোগ মোকাবিলা করার মতো সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সক্ষমতা যাচাই করা হয়েছে। গবেষকরা মূলত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে শিশুদের দুর্দশার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন।

তাদের তথ্য অনুসারে বিশ্বব্যাপী প্রতি চারটি শিশুর মধ্যে একটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় বসবাস করে। এ ছাড়াও জাতিসংঘের পরিসংখ্যানেও দেখা যায় যে, গত বছর সংঘাত-সংঘর্ষ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া অর্ধেকেরও বেশি মানুষের বয়স ১৮ বছরের নিচে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের স্তর বেড়ে যাওয়াসহ আরও নানা কারণে তালিকার শীর্ষে রয়েছে দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো। ভানুয়াতু দ্বীপের পর দ্বিতীয় ঝুঁকিপূর্ণ দেশ টোঙ্গা। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আরেক দ্বীপদেশ ফিলিপাইন। যার লোকসংখ্যা প্রায় সাড়ে ১০ কোটি। তবে জার্মান গবেষকরা মনে করেন, ওশেনিয়া সার্বিকভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপ্রবণ অঞ্চল। তাদের মতে আফ্রিকার দেশগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হিসেবে শীর্ষ ৫০টি দেশের তালিকায় যেমন স্থান পেয়েছে, তেমনি সামাজিক বিপর্যয়ের তালিকাভুক্ত ১৫টি দেশের মধ্যে ১৩টি আফ্রিকাভুক্ত। গবেষকরা চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছেন। এজন্য তারা উদাহরণ হিসেবে টানেন ইউরোপকে। সম্প্রতি ইউরোপের দেশগুলোতে বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে তীব্র দাবদাহ আঘাত হানে। অনেক স্থানে খরা দেখা দেওয়ায় সেখানকার কৃষিখাত সরাসরি ক্ষতির শিকার হয়েছিল। তবে ইউরোপের দেশগুলো সে সময় এই দাবদাহ মোকাবিলায় যে সব প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, সেগুলোকে ইতিবাচক উদাহরণ হিসেবে নেওয়ার কথা বলছেন গবেষকরা। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে ২০১৮ সালকে একটি সচেতনতার বছর বলে আখ্যা দিয়েছেন গবেষকরা। মানুষের মধ্যে এবারই এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকাটা কত জরুরি।

সর্বশেষ খবর