শুক্রবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

থার্ড টার্মিনালে বদলে যাবে বিমানবন্দর

চোখ ধাঁধানো নকশা, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি

জয়শ্রী ভাদুড়ী

থার্ড টার্মিনালে বদলে যাবে বিমানবন্দর

অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও প্রযুক্তিতে নির্মাণ হবে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। আগের দুই টার্মিনালের চেয়ে চার গুণ বড় এ টার্মিনাল ভবন বছরে কমপক্ষে ১ কোটি ৬০ লাখ যাত্রী ধারণে সক্ষম। গত ২০ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বানের মধ্য দিয়ে এ টার্মিনাল নির্মাণের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।

সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আগামী মার্চে দরপত্র চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। জাইকার অর্থায়নে প্রকল্প নির্মাণ হওয়ায় আমাদের পাশাপাশি তারাও দরপত্র যাচাই-বাছাই করবে। সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অত্যাধুনিক বিমানবন্দরে যে ধরনের সুবিধা থাকে তার সবই এখানে সন্নিবেশ থাকবে। বাংলাদেশে উড়োজাহাজ ব্যবহারকারী যাত্রীর সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে গড়ে তোলা হবে থার্ড টার্মিনালটি। আমরা সার্বিক কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’ প্রকল্পসূত্রে জানা যায়, ২ লাখ ২৬ হাজার বর্গমিটার জমির ওপর নির্মাণ হবে থার্ড টার্মিনাল। এর রানওয়ে হিসেবে ব্যবহার করা হবে মূল টার্মিনালের বর্তমান রানওয়ে; যা পরে সম্প্রসারণ করার প্রস্তাব রয়েছে। থার্ড টার্মিনালের নকশায় রাখা হয়েছে ২৪টি বোর্ডিং ব্রিজ। এর মধ্যে ১২টি প্রথম ধাপে নির্মাণ সম্পন্ন করা হবে। বাকিগুলো পরে প্রয়োজন অনুযায়ী নির্মাণ করা হবে। বোর্ডিং ব্রিজের সঙ্গে থাকবে ১৩টি চেক ইন বেল্ট। পর্যাপ্তসংখ্যক এক্সেলেটর, সাবস্টেশন ও লিফট সংযুক্ত রাখা হবে। থাকবে রাডার, কন্ট্রোল টাওয়ার, অপারেশন ভবন, বহুতল কারপার্ক। তিন তলাবিশিষ্ট এ টার্মিনাল ভবনটির স্থাপত্যরীতিতে আনা হয়েছে অনন্য নান্দনিকতা। টার্মিনাল ভবনের বহির্বিভাগে থাকবে চোখধাঁধানো নকশা। মন্ত্রণালয় ও সিভিল এভিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে তৃতীয় টার্মিনাল ভবনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি ৪৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাইকা। এ টার্মিনাল ভবন তৈরি করতে গিয়ে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে কার্গো ভিলেজ। এর আয়তন হবে ৪১ হাজার ২০০ বর্গমিটার। পার্কিং অ্যাপ্রোন রাখা হয়েছে ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ বর্গমিটার। এ ছাড়া র‌্যাপিড এক্সিট অ্যান্ড কানেকটিং ট্যাক্সিওয়ে ও টার্মিনাল ভবনের সঙ্গে বিমানবন্দর মূল সড়কের সংযোগ তৈরি করা হবে। ওয়ানওয়ে ট্রাফিক সিস্টেমে হোটেল লে মেরিডিয়েনের পাশ দিয়ে গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করে থার্ড টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে বলাকা ভবনের পাশ দিয়ে বের হয়ে যেতে হবে। সংযোগ সড়কগুলো তৈরি করা হবে পরিকল্পিতভাবে। শুধু তাই নয়, নতুন টার্মিনাল থেকে বর্তমান ভিভিআইপি গেটের বিপরীতে নির্মাণাধীন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে একটি সাবওয়ে (আন্ডারপাস)। এ সাবওয়ের মাধ্যমে তৃতীয় টার্মিনাল থেকে যাত্রীরা গাড়ি নিয়ে সরাসরি চলে যেতে পারবেন এক্সপ্রেসওয়েতে। এর ফলে টার্মিনালে প্রবেশ করতে কিংবা বের হতে যানজটের মুখোমুখি হতে হবে না যাত্রীদের।

সর্বশেষ খবর