শনিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
অরিত্রীর আত্মহত্যা

ভিকারুননিসায় এবার শিক্ষিকার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভিকারুননিসায় এবার শিক্ষিকার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ

শিক্ষিকা হাসনা হেনার মুক্তি দাবিতে গতকাল বিক্ষোভ করেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীরা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

এবার শিক্ষিকা হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একদল ছাত্রী। গতকাল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্কুলটির ওই শিক্ষিকার মুক্তির দাবিতে তারা বিক্ষোভ করে। হাসনা হেনার মুক্তি দেওয়া না হলে তাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। আজ বেলা ১১টার দিকে তারা ফের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বলে জানায়। উল্লেখ্য, স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গত বুধবার রাতে হাসনা হেনাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে আদালতে হাজির করা হলে বৃহস্পতিবার তাকে জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। জানা গেছে, গতকাল ছুটির দিনে প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন ক্লাসের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ২টার দিকে কয়েকশ ছাত্রী মেইন গেটের সামনে জড়ো হয়। তারা বসে শিক্ষিকা হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। বিকাল সাড়ে ৩টায় চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষে আরও বেশ কয়েক ছাত্রী এ আন্দোলনে যোগ দেয়। ‘আমাদের শিক্ষকরা থাকবে বিদ্যালয়ে—জেলে নয়, আমার মায়ের মুক্তি চাই, হাসনা হেনা আপার মুক্তি চাই, যাদের হাতে মানুষ গড়া তাদের হাতে কেন হাতকড়া, বিচার চাইতে গিয়ে কেন অবিচার হলো, অপরাধীর শাস্তি হোক নির্দোষের মুক্তি হোক, শিক্ষক যদি সম্মান না পায় এমন শিক্ষার দরকার কী!’ ইত্যাদি লেখা স্লোগান দেখা গেছে ছাত্রীদের হাতে। ভিকারুননিসার এসএসসির এক পরীক্ষার্থীর মা রহিমা আক্তার এ প্রতিবেদককে জানান, শিক্ষিকা হাসনা হেনাকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন তিনি। তিনি ছাত্রীদের অনেক প্রিয়। তিনি আত্মহত্যায় প্ররোচনা করতে পারেন না। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক লায়লা রহমান বলেন, মোবাইল তো স্কুলে নিষিদ্ধ ছিল। অরিত্রী কীভাবে মোবাইল নিয়ে স্কুলে আসল? আন্দোলনে অংশ নেওয়া রোজ নামে একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, যে শিক্ষিকাকে গ্রেফতার করা হয়েছে উনি কোনোভাবে অরিত্রীর ঘটনায় দায়ী নন। তার নাম  কোনোভাবেই ঘটনার সঙ্গে আসেনি। উনি পরিস্থিতির শিকার বলে আমরা মনে করছি। এদিকে শিক্ষিকার মুক্তির দাবিতে গত সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্বালনও করেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রীরা। প্রসঙ্গত, অরিত্রী গত রবিবার বার্ষিক পরীক্ষায় মোবাইল  ফোনে নকলসহ ধরা পড়েছিল। অভিযোগ ওঠে,  মোবাইল ও নকল পাওয়ায় বাবা-মাকে ডেকে নিয়ে ‘অপমান’ করেছিলেন অধ্যক্ষ। সে কারণে কিশোরী অরিত্রী আত্মহত্যা করে। এদিকে গতরাতে গভর্নিং বডির এক সভায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে কলেজ শাখার সহকারী অধ্যাপক হাসিনা বেগমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রভাতী শাখার প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মহসিন তালুকদারকে। গভর্নিং বডির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সর্বশেষ খবর