শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

চার্জশিটে ২৪ জঙ্গির নাম

কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানা

সাখাওয়াত কাওসার

রাজধানীর কল্যাণপুরের জাহাজবাড়ী জঙ্গি আস্তানার সঙ্গে ২৪ জঙ্গির সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। তাদের নামে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) আড়াই বছরের তদন্ত শেষে চার্জশিট প্রস্তুত করেছে। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য এই চার্জশিট ৫ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন প্রাপ্তির পর চার্জ গঠনের জন্য এটি আদালতে জমা দেওয়া হবে। আশা করা হচ্ছে, চলতি সপ্তাহেই এটির অনুমোদন মিলবে। সূত্র বলছে, জাহাজবাড়ীর ঘটনায় মোট ২৪ জনের মধ্যে নিহত হওয়ায় ১১ সদস্যকে চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দিয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আবেদন করা হয়েছে। এই ১৩ জনের মধ্যে ইকবাল, জুনায়েদ খান ও বাদলের পুরো নাম-ঠিকানা এখনো পাওয়া যায়নি। তাদের নাম মামলার এজাহারেও উল্লেখ ছিল। তবে জুনায়েদ খান তার ভাই ইব্রাহিম হাসান খানসহ আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটে যোগ দেওয়ার জন্য সিরিয়ায় গেছে বলে কথিত রয়েছে। এই তিনজনসহ মোট ছয়জন পলাতক। অন্যরা বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হয়েছেন। তারা এরই মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চার্জশিটভুক্ত অপর আসামিরা হলেন— রাকিকুল হাসান রিগ্যান (২১), সালাহ উদ্দিন কামরান (৩০), আবদুুর রউফ প্রধান (৬৩), আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ (২০), শরীফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ওরফে সোলায়মান (২৫), মামুনুর রশিদ রিপন ওরফে মামুন (৩০), আজাদুল কবিরাজ ওরফে বিপ্লবি ওরফে হার্টবিট (২৮), মুফতি মাওলানা আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর (৬০), আবদুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে নাসরুল্লা হক ওরফে মুসাফির ওরফে জয় ওরফে কুলমেন (৩৩) ও হাদিসুর রহমান সাগর (৪০)। চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে শরীফুল ইসলাম খালেদ, মামুনুর রশিদ রিপন ওরফে মামুন ও আজাদুর কবিরাজ এখনো পলাতক রয়েছেন। খালেদ ও রিপন দীর্ঘদিন ধরে ভারতে অবস্থান করছেন। চার্জশিটের বরাত দিয়ে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সিটিটিসির এক কর্মকর্তা বলেন, এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন বিভাগ সিটিটিসির জমা দেওয়া চার্জশিটের খুঁটিনাটি বিষয় যাচাই-বাছাই করে দেখেছে। গ্রেফতার কয়েকজনের জবানবন্দিতে জানা গেছে, কল্যাণপুরের আস্তানাটি মূলত ব্যবহার হচ্ছিল জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প হিসেবে। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, জঙ্গিরা হলি আর্টিজানের মতো আরও একটি হামলার পরিকল্পনা আঁটছিল। কিন্তু সিটিটিসি আস্তানার সন্ধান পেয়ে অভিযান চালালে তাদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তদন্তে যে ২৪ জঙ্গির নাম এসেছে তাদের মধ্যে ৯ জন নিহত হয় আস্তানায় অভিযানকালে। পরে অন্য একটি অভিযানে নিহত হয় আরও দুজন। ছয়জন এখনো পলাতক। বাকি সাতজন কারাগারে বন্দী। সূত্র জানায়, কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। বাকি নিহতরা হলেন মোতালেব ওরফে আবদুল্লাহ ওরফে রনি, আবু হাকিম নাঈম, তাজ-উল হক ওরফে রাশিক, আকিফুজ্জামান খান, রায়হান ওরফে রায়হানুল কবির ওরফে তারেক, মতিউর রহমান, জুবায়ের হোসেন, সেজাদ রউফ ওরফে অর্ক। এর বাইরে এই গ্রুপে সংশ্লিষ্ট ২০১৬ সালের ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হন তামিম আহমেদ চৌধুরী ওরফে আবু তালহা। ওই বছরের ৮ অক্টোবর আশুলিয়ার বসুন্ধরার টেক এলাকায় র‌্যাবের অভিযানে পালাতে গিয়ে পাঁচতলা থেকে পড়ে গিয়ে নিহত হন সারোয়ার জাহান মানিক। এ ছাড়া এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার দেখানো হলেও আহমেদ আজম ইমতিয়াজ ওরফে অমি ওরফে জহিরুল ইসলাম ওরফে জসিম এবং বাগেরহাটের একটি মামলার আসামি আকাশ ওরফে বাবু, হাবিবুল্লাহ, কবিরুল ইসলাম ওরফে কবির মুহুরি ও মিজানুর রহমানকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর