বৃহস্পতিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভোটের হাওয়া সারাদেশে

নোমান-খসরুর কঠিন চ্যালেঞ্জ

রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের ভোটের মাঠে নিজেদের আসনের গণ্ডি ছাড়িয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জে এবার সাবেক দুই মন্ত্রী যথাক্রমে আবদুল্লাহ আল নোমান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এই দুই শীর্ষ নেতার ভূমিকার ওপরই এবার চট্টগ্রামে বিএনপির জয়-পরাজয় অনেকটা নির্ভর করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞরা। শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন মনোনয়নের দৌড়ে বাদ পড়েছেন। বিএনপির আরেক শীর্ষ নেতা সাবেক মন্ত্রী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া এবং তার পরিবারের অন্যদের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় শেষ পর্যন্ত দলের চট্টগ্রামের আসনগুলোতে প্রার্থীদের বিজয়ী করার লক্ষ্যে চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে নোমান-খসরুকেই। এমনটাই মনে করছেন বিএনপির মাঠের কর্মীরা। চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও মিত্র জোট ১৫টিতে পুরনোদের বহাল রাখলেও বিএনপি ৯টি আসনেই মনোনয়ন দিয়েছে  নতুন মুখ। সাতটি আসনে অভিজ্ঞরা লড়লেও বিএনপি জোটের শরিক বা মিত্রদের ছাড় দেওয়া হয়েছে জামায়াত, এলডিপি ও কল্যাণ পার্টির চার নেতাকে। এতেও মাঠে আছে অস্থিরতা। এসব কারণে এবারের নির্বাচন চট্টগ্রামে বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জিং। আর এ চ্যালেঞ্জই নিতে হচ্ছে চট্টগ্রামে দলটির প্রধান এই দুই নীতিনির্ধারককেই। উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে মাঠের রাজনীতির কারিগর খ্যাত বিএনপির দুবারের মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের আছে প্রায় পাঁচ দশকের রাজনীতি সম্পৃক্ততার বর্ণাঢ্য অতীত। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই পর্যায়ক্রমে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম মহাসচিব, শ্রমিক দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে এখন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। স্বাধীনতার পর মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এই রাজনীতিবিদ ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর নিজের বিয়ের পরদিন টাঙ্গাইলের সন্তোষে অনুষ্ঠিত ন্যাপের প্রথম কংগ্রেসে নির্বাচিত হন সাংগঠনিক সম্পাদক। সেই কমিটিতে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন প্রচার সম্পাদক ও বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত আবদুল মান্নান ভূঁইয়া কৃষি সম্পাদক হন। জিয়াউর রহমানের সময় বিএনপিতে যোগ দিলে জিয়া তাকে মনোনীত করেন শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি। স্বৈরাচারী এরশাদ আমলে কারাভোগ করা এই নেতা পরবর্তীতে দলের টালমাটাল অবস্থায়ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছেড়ে যাননি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নিরবচ্ছিন্নভাবে বিএনপির রাজনীতি করা নোমান চট্টগ্রাম মহানগর ও উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে, পরপর তিনবারের নির্বাচিত এমপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী  দুই দফায় মন্ত্রী ছিলেন। চিটাগাং চেম্বারের দুবারের সভাপতি খসরু বিএনপিতে যোগ দিয়ে ১৯৯১ সালে উপনির্বাচনে এমপি হন।  সাউথ এশিয়ানা ফেডারেশন অব এক্সচেঞ্জেসের (সার্ক  দেশসমূহ নিয়ে গঠিত স্টক এক্সচেঞ্জ) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তিনি। ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, চট্টগ্রামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যথাক্রমে আহ্বায়ক এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। 

সর্বশেষ খবর