রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভো টে র হা ও য়া সা রা দে শে

মিসবাহর পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টিতে মহাজোটের নেতা-কর্মীরা একাট্টা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

মিসবাহর পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টিতে মহাজোটের নেতা-কর্মীরা একাট্টা

পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ

সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে মহাজোট মনোনীত প্রার্থী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহর পক্ষে ভেদাভেদ ভুলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংসগঠনসহ জোটের সব নেতা-কর্মী একাট্টা হয়ে লাঙ্গলের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট দলের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে পীর মিসবাহর পক্ষে মাঠে নেমেছেন। মাঠে কাজ করছেন পৌর মেয়র নাদের বখত। তার পক্ষে ভোট চাইছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান। তাদের নির্দেশনায় আওয়ামী লীগের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী লাঙ্গলের পক্ষে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।

এদিকে লাঙ্গলের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার এই সময়টাতে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন কর্মিসভা ডেকে মহাজোট প্রার্থীকে নিয়ে শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্যই রাখেননি, ব্যক্তিগত আক্রোশও ঝেড়েছেন। তার বক্তব্য ও তার কিছু কর্মীর তৎপরতায় ধানের শীষের কর্মীরা উত্ফুল্ল হয়েছেন। অনেকের অভিযোগ, ইমন দলের কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন।

সংসদ নির্বাচনে পীর মিসবাহ মহাজোট থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার পর লাঙ্গলকে বিজয়ী করতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। কেন্দ্রের নির্দেশনা ও প্রার্থীর অনুরোধে ক্রমান্বয়ে ভোটের মাঠে সক্রিয় হয়ে ওঠেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। দলকে লাঙ্গলের পক্ষে সক্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন নূরুল হুদা মুকুট। তার আহ্বানে অনুষ্ঠিত প্রথম কর্মী বৈঠকে লাঙ্গলের পক্ষে মাঠে নামার অঙ্গীকার করেন নেতা-কর্মীরা। এর পর থেকে সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে লাঙ্গলের পক্ষে গণসংযোগ শুরু করেন নূরুল হুদা মুকুট। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের এই নেতা মাঠে নামার পর পালটে যায় দৃশ্যপট। নিষ্ক্রিয় কর্মী-সমর্থকরা যার যার অবস্থান থেকে মহাজোটের প্রার্থী পীর মিসবাহর পক্ষে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। বর্তমানে মুকুটের তত্ত্বাবধানে দুই উপজেলায় প্রতিদিন বেশ কয়েকটি গ্রুপ গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে, এ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হয়েও বিভেদ ভুলে লাঙ্গলের পক্ষে নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠে নেমেছেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান। বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ ও গণসংযোগ করে ঐক্যবদ্ধভাবে লাঙ্গলকে বিজয়ী করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। তার ডাকে সাড়া দিয়ে ভোটের মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন নেতা-কর্মীসহ সাধারণ ভোটাররা। জেলার দুই প্রভাবশালী নেতা মতিউর-মুকুট লাঙ্গলের পক্ষে নেমে পড়ায় অন্যরকম মাত্রা যোগ হয় পীর মিসবাহর পক্ষে। পীর মিসবাহর পক্ষে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিন, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য শাহানা রব্বানী প্রমুখ নেতা।

এদিকে, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের আন্তরিক ভূমিকার কারণে মহাজোটের নেতা-কর্মীরা যখন লাঙ্গলের পক্ষে একাট্টা তখন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সদরে কর্মিসভা ডেকে মহাজোটের প্রার্থী, তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক বক্তব্য দিয়ে কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের মাঝে কৌশলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন মনোনয়নবঞ্চিত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই কর্মিসভায় দেওয়া ইমনের নেতিবাচক বক্তব্যে তোলপাড় সৃষ্টি হলে নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

বক্তব্যে ইমন মহাজোট প্রার্থীকে নিয়ে শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্যই দেননি, সম্বোধনই করেননি তাকে। উলটো ব্যক্তিগত আক্রোশ ও ক্রোধ ঝেড়েছেন। তিনি একবার মনোনয়ন পেয়েও জোটের স্বার্থে প্রত্যাহার ও এবার মনোনয়ন না পাওয়ার যন্ত্রণা প্রকাশ করেছেন। অনেকেই বলছেন, তার বক্তব্য ও তার কিছু কর্মীর তৎপরতায় ধানের শীষের কর্মীরা উত্ফুল্ল হয়েছেন।

একই সভায় জেলা সভাপতি মতিউর রহমান নিজের মনোনয়ন না পাওয়ার বেদনা উল্লেখ করলেও বলেছেন, নেত্রীর নির্দেশে মহাজোট প্রার্থীকে লাঙ্গলে ভোট দিতে হবে। গতকালও তিনি ডলুরায় এক সভায় শেখ হাসিনার নির্দেশে মহাজোট প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। এখানে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি অ্যাডভোকেট শাসসুন্নাহার শাহানা বলেন, এখানে নৌকাই লাঙ্গল, লাঙ্গলই নৌকা। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিনও বলেন, এখানে মহাজোটের প্রার্থী পীর মিসবাহকে লাঙ্গলে ভোট দিন।

সর্বশেষ খবর