মঙ্গলবার, ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

জামানত বাজেয়াপ্ত তাদের

শামীম আহমেদ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ন্যূনতম ভোট না পাওয়ায় ২৯৮ আসনের ফলাফলে ৮২ শতাংশের বেশি প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী নির্বাচনে প্রদত্ত (কাস্টিং ভোট) ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগের কম; অর্থাৎ ১২ দশমিক ৫ শতাংশের কম ভোট পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। রেকর্ড জয়ের এ নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের কম পাওয়ায় ৮২ ভাগের ওপরে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন যা বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড। এর মধ্যে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক। আর সেই তালিকায় আছেন অনেক আলোচিত ও হেভিওয়েট প্রার্থীও। ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদে ৩০ ডিসেম্বর ভোট হয় ২৯৯টিতে। একটি বাদে ২৯৮টি আসনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।

এবার প্রত্যেক প্রার্থীকে ২০ হাজার টাকা জামানত দিতে হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সবই অংশ নিয়েছে। ২৯৯টি আসনে দলীয় প্রার্থী ছিলেন এক হাজার ৭৩৩ জন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়েছেন ১২৮ জন।

বরিশাল বিভাগের ২১টি আসনে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ১৭টিতে। জাতীয় পার্টি পেয়েছে চারটিতে। এই বিভাগে শুধু বরিশাল-৩ আসনে বিএনপির জয়নুল আবেদীন, বরিশাল-৫ আসনে বিএনপির মজিবর রহমান সরওয়ার ও পটুয়াখালী-৪ আসনে বিএনপির এ বি এম মোশাররফ হোসেন ছাড়া সব প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এ বিভাগে মোট প্রার্থী ছিলেন ১১৫ জন। জামানত হারিয়েছেন ৯১ জন। রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনের মধ্যে ভোট গ্রহণ হয়েছে ৩২টিতে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৪টি, জাতীয় পার্টি সাতটি ও বিএনপি একটি। ৩২ আসনের সাতটিতে (নীলফামারী-৪, লালমনিরহাট-১, রংপুর-১, রংপুর-৬, ঠাকুরগাঁও-২, গাইবান্ধা-৪ ও গাইবান্ধা-৫) বিজয়ী প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। অন্য ২৫ আসনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জামানত না হারালেও ৮ শতাংশের কম ভোট পাওয়ায় অন্য সব প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ বিভাগে মোট প্রার্থী ছিলেন ২১২ জন। জামানত হারিয়েছেন ১৫৫ জন। রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ৩১টি, বিএনপি চারটি, জাতীয় পার্টি দুটি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি ও স্বতন্ত্র একটি। ৩৯ আসনের ২১টিতেই বিজয়ী প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রদত্ত মোট ভোটের আট ভাগের একভাগ পাননি। ফলে এসব প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এই বিভাগের ৩৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ২০১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে জামানত হারাচ্ছেন ১৪৪ জন।

সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনে অবশ্য কোনো নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীই বলা যায় জামানত হারাচ্ছেন না। এখানে বিজয়ী ও নিকটতম প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের ব্যবধানও অন্যান্য বিভাগগুলোর চেয়ে কম। তবে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অধিকাংশই জামানত হারাচ্ছেন। সিলেট বিভাগের ১৯ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ১৬টি, গণফোরাম দুই ও জাতীয় পার্টি একটি আসনে জয়লাভ করেছে। এই বিভাগের ১৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১২০ প্রার্থী। এর মধ্যে জামানত হারাচ্ছেন ৮২ প্রার্থী।

একইভাবে ঢাকা বিভাগের ৭০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৫৬০ জনের মধ্যে তিন শতাধিক প্রার্থীর, খুলনা বিভাগের ৩৬টি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ২০২ প্রার্থীর মধ্যে দেড় শতাধিক প্রার্থীর, চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৮টি সংসদীয় আসনের ৫৭টির ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৪১৩ প্রার্থীর মধ্যে প্রায় তিনশ প্রার্থীর এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ২৪টি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ১২৫ জনের মধ্যে বিজয়ী ছাড়া অধিকাংশ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর