শিরোনাম
বুধবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নিত্যপণ্যের বিশ্ববাজারে স্বস্তি

শুধু গমের দাম বেড়েছে ১৯ থেকে ২০ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদায়ী বছরে বিশ্ববাজারে গম ছাড়া প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের বাজার ছিল স্থিতিশীল। ফলে ভোক্তারা ছিলেন স্বস্তিতে। এ সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম বেড়েছে ১৯ থেকে ২০ শতাংশ। বিদায়ী বছরে চাল, চিনি, ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের বাজার ছিল নিম্নমুখী। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসাবে গত এক বছরে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। নিত্যপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ে এএফপি, রয়টার্স, ট্রেডিং ইকোনমিকস, এফএওসহ বিভিন্ন সংস্থা এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এফএও’র তথ্যমতে, বছরের শুরু থেকে বিশ্ববাজারে চিনির বাজার নিম্নমুখী থাকলেও গত নভেম্বরে দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। আগের দুই মাসও বেড়েছিল। তবে পুরো বছরের হিসাবে চিনির দাম কমেছে ১৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। ব্রাজিল, ভারতসহ কয়েকটি দেশে চিনির উৎপাদন বাড়লেও কিছু কিছু অঞ্চলে কমেছে। তবে সার্বিকভাবে আগের বছরের তুলনায় বিদায়ী বছরে চিনির দাম কমেছে। এফএও-এর তথ্যমতে, গত এক বছরে বিশ্ববাজারে গমের দাম বেড়েছে ১৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এ বছর বিশ্বব্যাপী আগের তুলনায় বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া ও কানাডাসহ কয়েকটি দেশ থেকে গমের উৎপাদন সরবরাহ হ্রাস পেয়েছে। এফএওর পূর্বাভাস অনুযায়ী এ বছর বিশ্বে গমের উৎপাদন হয় ৭২৫ দশমিক ১ মিলিয়ন টন, যা গত বছরের চেয়ে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কম। এ সময়ে গম কেনাবেচায় বাণিজ্য হয়েছে ১৭২ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন, যা ২০১৭-১৮ মৌসুমের চেয়ে ২ দশমিক ১ শতাংশ কম। বিদায়ী ২০১৮ বছরে চালের বাজার স্থিতিশীলই ছিল। ট্রেডিং ইকোনমিকসের হিসাব অনুযায়ী এক বছরে চালের দাম কমেছে ১০ দশমিক ৬০ শতাংশ। এফএওর পূর্বাভাস অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী আগের বছরের তুলনায় গত বছর চালের উৎপাদন ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড পরিমাণ ৫১৩ মিলিয়ন টনে উন্নীত হয়েছে। ফলে চালের বাজারও ছিল নিম্নমুখী।

চালের মতো পুরো বছরও নিম্নমুখী ছিল ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজার। গত নভেম্বরে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে টানা ১০ মাস ভোজ্যতেলের বাজার নিম্নমুখী রয়েছে। এ বছর সয়াবিনের দাম কমেছে ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আর পাম তেলের দাম কমেছে ১৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর চলতি সপ্তাহেই বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। গত বছর টানা ছয় মাস বিশ্ববাজারে কমেছে দুগ্ধপণ্যের দাম। সর্বশেষ গত নভেম্বরে দুগ্ধপণ্যের দাম কমেছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সব মিলিয়ে বিদায়ী বছরে দুধজাতীয় পণ্যে দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ দুগ্ধপণ্য রপ্তানিকারক দেশগুলোতে উৎপাদন বাড়ায় নিম্নমুখী রয়েছে দুগ্ধপণ্যের বাজার। টানা তিন বছর নিম্নমুখী থাকার পর ২০১৭ সালে বিশ্ববাজারে বাড়তে শুরু করে জ্বালানি তেলের দাম। একইভাবে ২০১৮ সালের শুরুতেও তা অব্যাহত থাকে। তবে সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহের ঘটনা না ঘটায় বছর শেষে আবারও কমতে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের দাম। সর্বশেষ গত ২৭ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের অশোধিত তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৪৫ দশমিক ৭২ ডলার এবং ব্রেন্ট তেলের দাম দাঁড়ায় ৫৩ দশমিক ৭৭ ডলারে। গত বছর সার্বিক হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের অশোধিত তেলের দাম কমেছে ২৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং ব্রেন্ট তেলের দাম কমেছে ১৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ। পাশাপাশি গত ২৭ ডিসেম্বর সোনার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে আউন্স প্রতি এক হাজার ২৭৩ ডলার। তবে এক বছরের হিসাবে দাম কমেছে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ২০১৮ সালে রুপার দামও কমেছে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ব প্রবৃদ্ধি নিয়ে হতাশা বাড়ায় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে আগামী বছর সোনার চাহিদা বাড়তে পারে, যা দাম বাড়াবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সর্বশেষ খবর