শুক্রবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

৩০ ডিসেম্বর কল ছিল ৩০ হাজার

জরুরি সেবা ৯৯৯, সাড়ে ১১ মাসে ৭১ লাখ কল, গড়ে প্রতিদিন ১৫ হাজার

সাখাওয়াত কাওসার

দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯। আস্থার প্রতীক হয়ে উঠছে সাধারণ মানুষের। ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর সেবাটি চালুর পর থেকে চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ১১ মাসে প্রায় ৭১ লাখ কল রিসিভ করেছে ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ। সেবা দেওয়া হয়েছে ১২ লাখ ৮৬ হাজার ৩১৫ জনকে। কর্তৃপক্ষ বলছে, শুরুতে বেশি কল এলেও বর্তমানে তারা প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজার কল রিসিভ করেন। তবে গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন ৩০ হাজার ৯০৬টি কল তারা রিসিভ করেছেন। সেবা দেওয়া হয়েছে ৯৯৮টি কলের।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাতীয় জরুরি সেবার সূচনা থেকে এ পর্যন্ত খুনের চেষ্টা প্রতিহত করা থেকে শুরু করে নারী পাচার রোধসহ প্রায় সব ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। একই সময়ে অপ্রয়োজনে কিংবা সেবা কার্যকর কি না, তা জানতে কল দিয়েছে প্রায় ৫৯ লাখ মানুষ। তবে পুলিশ বলছে, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে এবং ভুয়া কলের সংখ্যাও আস্তে আস্তে কমে আসছে। সূত্র বলছে, গত ৩০ ডিসেম্বর মুগদা থেকে এক ব্যক্তি ‘৯৯৯’ এ ফোন করে জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক ব্যক্তি তাকে জানিয়েছেন বাংলাদেশে পুলিশের ওপর অ্যাটাক হতে পারে। এই বিষয়টি তারা জানেন কি না? ওই ফোনের তথ্যাদি পুলিশ সদর দফতরকে অবহিত করেছিল ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ। একই দিন রাজধানীর উত্তরা থেকে আরেকজন ‘৯৯৯’ এ ফোন করে জানিয়েছিলেন, পিরোজপুরে এক প্রার্থীর পোস্টার পোড়ানো হচ্ছে। ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে পায় যে তথ্যটি সঠিক নয়। জাতীয় জরুরি সেবা বিভাগের পুলিশ সুপার তবারক উল্লাহ জানান, জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে ‘৯৯৯’। সেবার শুরুর দিকে কিছুদিন অপ্রয়োজনীয় অনেক কল আসত। সেবাটি আসলেই চালু আছে কি না, তা জানতে অনেকেই কল করতেন। ওই ধরনের কল দিন দিন কমছে। তিনি আরও বলেন, ২৪ ঘণ্টাই পুলিশ জরুরি কলের মাধ্যমে সেবা দিচ্ছে। জনবল ঘাটতি ও গাড়ি স্বল্পতা ইত্যাদি সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারলে মানুষকে আমরা আরও সহযোগিতা করতে পারব। পুলিশের সহায়তা চেয়েই বেশিরভাগ ফোন আসে। এ ছাড়া দুর্ঘটনার খবর জানাতে ও নিরাপত্তা চেয়েও অনেক বেশি ফোন আসে।

জানা গেছে, মূলত তিন ধরনের জরুরি সেবা দেওয়া হয়। এগুলো হলো- পুলিশি সেবা, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে প্রাণনাশের আশঙ্কা, ধর্ষণ সংক্রান্ত ঘটনা, গৃহকর্মী নির্যাতন, কাউকে আটকে রাখা, লিফটে আটকেপড়া, অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকা, দুর্ঘটনা, অগ্নিকাে র ঘটনা, অ্যাম্বুলেন্স, পারিবারিক সমস্যা সমাধান, নিখোঁজ শিশু উদ্ধার, গাছ কাটা বন্ধ করা, শব্দদূষণ, ছিনতাইসহ নানা ধরনের সমস্যায় সাধারণ ও বিপদগ্রস্ত মানুষকে তারা সহায়তা দিচ্ছেন। ৯৯৯ সেবা সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকে। এখানে মুঠোফোন করার জন্য মূল্য দিতে হয় না। ৯৯৯ সার্ভিসের প্রশিক্ষিত কর্মীরা প্রয়োজন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ বা অ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদানকারীর সঙ্গে  যোগাযোগ করিয়ে দেন।

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর কার্যক্রম পরিচালিত হয় রাজধানীর আবদুল গনি  রোডের পুলিশ কন্ট্রোলরুম থেকে। একজন পুলিশ সুপারের (এসপি) তত্ত্বাবধানে দুটি ফ্লোরে কাজ করেন ৪৬৮ জন। এর মধ্যে একজন এসপি ছাড়াও আছেন তিন এএসপি, ৩৮৭ কল টেকার, ৫৩ ডিসপাসার এবং ২৩ সুপার ভাইজার। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা এখানে চারটি শিফটে কাজ করেন তারা।

সর্বশেষ খবর