বৃহস্পতিবার, ১০ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা

গোলাম রাব্বানী

আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বড় পরিসরে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের চিন্তাভাবনা করছে কমিশন। এ নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসছে ইসি। ওই  বৈঠকে উপজেলা ছাড়াও অন্যান্য নির্বাচনে ইভিএম ও প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়েও আলোচনা হবে। এদিকে নির্বাচন কমিশন উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, মার্চে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মতোই এবারেও ধাপে ধাপে নির্বাচন করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। শিগগিরই নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিগত সময় উপজেলা পরিষদে নির্দলীয় ভোট হলেও এবার দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনেও লড়াই হবে নৌকা-ধানের শীষসহ অন্যান্য দলীয় প্রতীকের। সূত্র জানিয়েছে, দেশে ৪৯২টি উপজেলা রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটিতে সম্প্রতি নির্বাচন হয়েছে। তবে মার্চের মধ্যে যেগুলো নির্বাচন উপযোগী হবে সেগুলোতে প্রথম ধাপে ভোট হবে। এ জন্য চলতি জানুয়ারির শেষে অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। এবারে নির্বাচন কমিশন বড় আকারে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনা নিচ্ছে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ২ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চের মধ্যে শেষ হতে পারে। তাই এসব বিষয় মাথায় রেখে ইসি ভোটের তারিখ নির্ধারণ করবে। এক্ষেত্রে মনোনয়ন দাখিল থেকে প্রত্যাহার পর্যন্ত ১৪-১৫ দিন সময় দেওয়া হতে পারে। আর প্রচারণার জন্য সময় থাকবে ১৪-১৬ দিন। সেই হিসাবে জানুয়ারির শেষে অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে তফসিল হলে মার্চের ৩ অথবা ৭ তারিখে প্রথম ধাপের ভোট হবে। আর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে দ্বিতীয় ধাপের তফসিল দিয়ে মার্চের মঝামাঝিতে ভোট করার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে একই দিন সারা দেশে ভোট করার প্রস্তাবও রাখবে ইসি সচিবালয়। এক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির শুরুতে তফসিল দিয়ে মার্চেই ভোট শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে সরকারের গ্রিন সিগন্যালের ওপর। এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, উপজেলা নির্বাচন তো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই করতে হবে। যেহেতু ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষা আর এপ্রিল মাসে এইচএসসি পরীক্ষা। তাই আমরা মার্চ মাস ধার্য করেছি উপজেলা নির্বাচন করার জন্য। কমিশন যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা সেভাবে এগিয়ে যাব। আইন অনুযায়ী, কোনো উপজেলা পরিষদেও মেয়াদ পূর্তির আগের ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পরই, ১৯ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কমিশন। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত মোট ছয় ধাপে ওই নির্বাচনের ভোট হয়।

 সে সময় ছয় ধাপে ৪৮৭টিরও বেশি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল দেশের চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন। তবে গতবার নির্দলীয় ভোট হলেও এবার দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের এ নির্বাচন হবে।

উপজেলাসহ নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার : আসন্ন উপজেলা নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি বৈঠকে বসছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশন ভবনে ওই বৈঠক হবে। বৈঠকে জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে সংসদ নির্বাচনে ৬ আসনে ব্যবহৃত ইভিএমের বিষয়ে পর্যালোচনা; অনলাইন মনোনয়নপত্র জমা; কেন্দ্রভিক্তিক ফলাফল ওয়েবসাইটে প্রকাশ; আসন্ন উপজেলা নির্বাচন; ভোটার তালিকা হালনাগাদে ট্যাব এবং জিআইএস ব্যবহার; প্রবাসী ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান; ১২-১৮ বছর বয়সী নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার জন্য নিবন্ধনকরণসহ বেশকিছু বিষয় রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনে আমরা প্রযুক্তির ব্যবহার করছি। আগামীতে উপজেলাসহ অন্যান্য নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।

সর্বশেষ খবর