শনিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

হত্যার পর দুই বন্ধুকে নিয়ে স্ত্রীর লাশ গুম

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুরের ভাওরাইদে নিজ বাসায় স্ত্রী হত্যার অভিযোগে রাজধানীর ডেমরা থেকে স্বামী শাহজাহানসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। অন্যরা হলো খোকন মিয়া (২২) ও মুকুল মিয়া (২৫)। র‌্যাব বলছে, স্ত্রী আফরোজা বেগমকে (২৬) হত্যার পর দুই বন্ধুর সহায়তায় সেপটিক ট্যাংকে লাশ লুকিয়ে রাখে শাহজাহান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ এর একটি দল ডেমরা থেকে তাদের গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম।

গতকাল কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, ৩ জানুয়ারি পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী আফরোজাকে (২৬) হত্যার পর লাশ ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে শাহজাহান। এরপর লাশ গুম করতে বন্ধু খোকন ও মুকুলকে বাসায় ডেকে আনে সে। তিনজন মিলে আফরোজার লাশ রাতের অন্ধকারে বাড়ির পাশে থাকা সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়। আফরোজার লাশ গুম করার পর শাহজাহানের কাছ থেকে খোকন চার হাজার এবং মুকুল ২৫০০ টাকা নেয়। এরপরও ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে পরদিন স্থানীয় কাউন্সিলরকে আফরোজা হত্যার ঘটনা জানিয়ে দেয় খোকন ও মুকুল। সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, আট বছর আগে গাজীপুরের একটি সুতার মিলে কাজ করার সময় শাহজাহান ও আফরোজার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। সংসারে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তবে বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করতে থাকে শাহজাহান। এ কারণে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, ২০১৬ সালে আফরোজা কাজের উদ্দেশে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপর স্ত্রীর কাছে বিদেশে অর্জিত টাকার হিসাব চাইতে থাকেন শাহজাহান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ বেড়ে যায়। গত ৩০ নভেম্বর আফরোজা ভোট দিয়ে বাসায় ফেরার পর তাকে বেধড়ক মারধর করে শাহজাহান। এরপর ৩ জানুয়ারি সকালে দুজনের মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে শাহজাহান তার স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করে খাটের নিচে লাশ লুকিয়ে রাখে। র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, হত্যার পর স্ত্রীর লাশ গুম করতে শাহজাহান তার বন্ধু খোকন ও মুকুলকে বাসায় ডেকে আনে। তিনজনে মিলে ওইদিন রাতে বাসার পাশে সেপটিক ট্যাংকে আফরোজার লাশ ফেলে দেয়। গুমের পর  শাহজাহানের কাছ থেকে খোকন ৪ হাজার এবং মুকুল ২৫০০ টাকা নেয়। টাকা নিলেও খোকন ও মুকুল ঘটনা জানাজানির ভয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে বিষয়টি বলে দেয়। তারা কাউন্সিলরকে জানায়, রাতে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখতে পায়, শাহজাহান তার স্ত্রীর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিচ্ছে। মূল আসামি শাহজাহানকে গ্রেফতারের পর তার অভিযোগের ভিত্তিতে খোকন ও মুকুলের বিষয়টি উঠে আসে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর