শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

গোপন ভোটে হবে প্রার্থী মনোনয়ন

উপজেলা নির্বাচনে সতর্ক আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাবিরোধী পরিবার থেকে কেউ পাবে না, বাদ এমপিদের স্বজনরা

রফিকুল ইসলাম রনি

গোপন ভোটে হবে প্রার্থী মনোনয়ন

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী কোনো পরিবারের সন্তানকে মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগ। দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের সময় এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে তৃণমূলের গোপন ভোটে যারা এগিয়ে থাকবেন তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এমপিদের স্বজনদের মনোনয়ন না দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, গত ১০ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় অনেক জেলা-উপজেলায় স্থানীয় নেতা, এমপি-মন্ত্রী এমনকি কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রশ্রয়ে স্বাধীনতাবিরোধী অনেক পরিবারের সন্তানেরা আওয়ামী লীগে ঢুকেছে। এদের অধিকাংশই অতীতে জামায়াত-বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তারা নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্প্রসারণ করাসহ নানা কারণে ক্ষমতাসীন দলে যোগদান করেছেন। আর স্থানীয় নেতা, এমপি-মন্ত্রীরা নিজ নিজ বলয় ভারী করতে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন। এদের কেউ কেউ আবার দলীয় পদ-পদবি বাগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বিগত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে চেয়ারম্যান হয়েছেন। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনেও তাদের কেউ কেউ নৌকা নিয়ে ভোট করতে চান। তবে স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তানকে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেবে না।  এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন খসরু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আসন্ন প্রার্থী বাছাইয়ে আওয়ামী লীগ যে সব মানদ- নির্ধারণ করেছে তার অন্যতম হচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তানকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়া।  সূত্রমতে, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একক মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কাউকে মনোনয়ন দেবে না। নির্বাচন শুরু হওয়ার তৃণমূল থেকে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থীর নাম চাওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করতে যারা ব্যর্থ হবেন তাদের তিনজনের নাম পাঠাতে বলা হয়েছে।

দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী বাছাইয়ের সময় বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের কোনো সদস্য যেন প্রার্থী হতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি স্বাধীণতাবিরোধী রাজাকার ও তাদের সন্তানকে মনোনয়ন দিয়েছিল। দেশের তরুণ সমাজ বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি।  আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চারটি মানদ  নিধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে তৃণমূলে যিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গোপন ভোটে নির্বাচিত হবে-তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। অন্যদিকে স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের কোনো সন্তান ও কমপক্ষে এক যুগ দলের নয় এমন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।’

 দলীয় সূত্রমতে, এবার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখা হচ্ছে গত সংসদ নির্বাচনে জনপ্রিয়তা এগিয়ে ছিলেন কিন্তু মনোনয়ন পাননি এমন ব্যক্তিদের। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়তা রয়েছে, ক্লিন ইমেজসহ তৃণমূলে যার জনপ্রিয়তা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের।

জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল আওয়ামী লীগে ভোটের আগেই ভোট উৎসব শুরু হয়েছে। কোনো কোনো উপজেলায় সমঝোতার ভিত্তিতে চলছে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া। আবার কোথাও কোথাও গোপন ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর