রবিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

মনোনয়নই কাল হলো গরিবের নেতা নূর মোহাম্মদের

জামালপুর প্রতিনিধি

গরিবের নেতা হিসেবে পরিচিত জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার পরই নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে এ হয়রানির শুরু। গত  ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে তার বিরুদ্ধে বেশকিছু অবান্তর অভিযোগ লিখে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে বেনামি চিঠি পাঠায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ অভিযোগটিকে কোনো গুরুত্ব না দিলেও ওই চিঠির সূত্র ধরে নূর মোহাম্মদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে স্থানীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়ে তদন্তে নেমেছে দুদক। জানা যায়, ঢাকায় ব্যবসা করে বকশীগঞ্জে বাড়ি বাড়ি টিউবয়েল স্থাপন, গাছ লাগানো, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় স্থানীয় সাধারণ মানুষের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন নূর মোহাম্মদ। সেই জনপ্রিয়তা বিবেচনায় জামালপুর-১ আসনে প্রথম দফায় মনোনয়ন পান আবুল কালাম আজাদ এবং নূর মোহাম্মদ দুজনই। পরে দলীয় সভানেত্রী নূর মোহাম্মদকে ডেকে নিয়ে ভবিষ্যতে মূল্যায়নের আশ্বাস দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে নির্দেশ দেন। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশ মেনে নূর মোহাম্মদ নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে এলাকার প্রতিটি নেতা-কর্মীকে নিয়ে মাঠে নামেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয় হয় বিপুল ভোটে। কিন্তু নূর মোহাম্মদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত স্থানীয় একটি সুবিধাভোগী মহল তাকে হেনস্তা করতে উঠেপড়ে লাগে। দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে দেওয়া সেই বেনামি চিঠির কপি দেওয়া হয় দুদকসহ বিভিন্ন দফতরে। পরে দুদকের টাঙ্গাইল কার্যালয় থেকে নূর মোহাম্মদ, তার স্ত্রী, মেয়ে ও দুই ছেলের নামে তথ্য চেয়ে জামালপুরের ১৫টি ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়। একই চিঠি দেওয়া হয় বকশীগঞ্জের বিভিন্ন ব্যাংকেও। কিন্তু এসব ব্যাংকে নূর মোহাম্মদ ও তার সন্তানদের নামে কোনো অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এমনকি বেনামি ওই চিঠিতে করা ১৫ অভিযোগে যেসব অবৈধ সম্পদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার কোনোটাই নূর মোহাম্মদের নেই। চিঠিতে যে অফিসটিকে তার সম্পদ হিসেবে বলা হয়েছে সেটিও ভাড়া নেওয়া। জামালপুরের ব্যাংকগুলো দুদককে এরই মধ্যে জানিয়েছে, তার নামে এ ধরনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কোনো অস্তিত্ব নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করতেই এসব অভিযোগ করা হয়েছে বলে মনে করছেন বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা। বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইছমাইল হোসেন বাবুল তালুকদার বলেন, ‘গত ১০ বছর এলাকার টিআর, কাবিখা, কর্মসৃজন, টেন্ডার-ব্যবসা কোনোটার সঙ্গেই তার ন্যূনতম সম্পর্ক ছিল না। তাই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিতান্তই বানোয়াট। বেনামি চিঠিতে অবান্তর অভিযোগ আমাদের হতবাক করেছে।’ বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয় বলেন, ‘বকশীগঞ্জে নূর মোহাম্মদের কোনো ব্যবসা নেই । তিনি ঢাকায় ব্যবসা করে যা আয় করেন তার বেশির ভাগই দলের পেছনে ব্যয় করেন।’ বেনামি ওই অভিযোগকারীকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি স্থানীয় আওয়ামী লীগের।

সর্বশেষ খবর