মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

হারিয়ে যাচ্ছে নীলকুঠির স্মৃতি

নাটোর প্রতিনিধি

হারিয়ে যাচ্ছে নীলকুঠির স্মৃতি

ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজদের শোষণ ও নির্যাতনের ইতিহাস কম-বেশি সবার জানা। ভারত উপমহাদেশ থেকে ইংরেজদের পতন ঘটলেও তাদের শোষণ-নির্যাতনের নানা স্মৃতি আজও রয়ে গেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। নীল চাষের জন্য কৃষকদের ওপর ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির নীলকর ইংরেজ সাহেবদের নির্যাতনের নির্মম স্মৃতি আজও কালের সাক্ষী হয়ে রয়েছে বাগাতিপাড়া উপজেলার নওশেরা গ্রামের নীলকুঠিবাড়ি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়া এই নীলকুঠি ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে হারিয়ে গেছে বাগাতিপাড়া সদর, পারকুঠি, নুরপুর কুঠি বাঁশবাড়ীয়া, চিথলিয়া এলাকায় ইংরেজ নীলকরদের সময় তৈরি স্থাপনা। সে সময়কার শত কোটি টাকার স¤পদ এখন বেদখল হয়ে গেছে। কালের সাক্ষী হিসেবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়া ধ্বংসপ্রায় নওশেরা গ্রামের নীলকুঠিবাড়ি সংস্কারসহ ইংরেজদের নির্মম নির্যাতন কাহিনী সংরক্ষণ করার দাবি স্থানীয়দের। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, ব্রিটিশ শাসনের সময় ইংরেজরা বাগাতিপাড়া উপজেলার নওশেরা, পারকুঠি, নুরপুর কুঠি বাঁঁশবাড়ীয়া, চিথলিয়া এলাকায় কুঠিবাড়ি স্থাপন করে স্থানীয় কৃষকদের জোরপূর্বক নীল চাষে বাধ্য করত। কালের বিবর্তনে সে সময়ের অফিস-আদালত এবং নীল সংরক্ষণাগারসহ বহু স্থাপনা ভূমিক¤েপ বিলীন হয়ে গেছে। ইংরেজ নীলকরদের মধ্যে কুরিয়াল টিসি চুইডি, সিনোলব ম্যাকলিইড, ডাম্বল, ব্রিজবেন নিউ হাউজ-এর নাম উল্লেখযোগ্য। এসব নীলকর রাজশাহী, ঝিনাইদহ, শিকারপুর, কেশবপুর এবং বাগাতিপাড়া এলাকায় জোরপূর্বকভাবে নীল চাষ করাত। কালের সাক্ষী হিসেবে পড়ে রয়েছে ইংরেজ সাহেবদের জন্য তৈরি নীলকুঠি নামে পরিচিত নওশেরা গ্রামের সেই ডাকবাংলো। এক সময়ের ইংরেজ শাসকগোষ্ঠীর নির্মম নির্যাতনের স্মৃতিচিহ্ন অভিশপ্ত নীলকুঠিরের ডাকবাংলো অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। বিলীন হয়ে যেতে বসেছে ঐতিহাসিক এসব স্থাপনা। স্থানীয়রা ধ্বংসপ্রায় ওই কুঠিবাড়ি সংস্কারসহ ইংরেজদের নির্মম নির্যাতনের ইতিহাস সংরক্ষণ করার দাবি জানিয়েছে সরকারের কাছে।

সর্বশেষ খবর