মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

পরকীয়ার প্রতিশোধ নিতে ১১ টুকরা করা হয় লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

বন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করার প্রতিশোধ নিতেই খুলনায় ঠিকাদার মো. হাবিবুর রহমান ওরফে সবুজকে (২৬) হত্যা করে খুনিরা। পরে দা ও ছুরি দিয়ে লাশ কেটে ১১টি টুকরা করা হয়। হত্যাকান্ডে জড়িত আসাদুজ্জামান (৩৫) ও অনুপম (৩০) র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা জানান।  র‌্যাব-৬ এর স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. শামীম সরকার বলেন, ‘হত্যায় জড়িতদের সঙ্গে নিহতের পরিচয় হয় কারাগারে। এরা প্রত্যেকে একাধিক মামলার আসামি। জামিনে বাইরে বের হওয়ার পর হাবিবুর কারাগারে থাকা আরেকজনকে মুক্ত করতে গিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনা জানাজানি হলে কারাগারে থাকা ওই আসামি মুক্ত হয়ে হাবিবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে।’ সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, হত্যার পর লাশ লুকাতে কয়েকটি টুকরা করা হয়। পরে শরীরের বিচ্ছিন্ন ৭টি টুকরা পলিথিনে জড়িয়ে ফেলে দেওয়া হয়। দুই পাসহ আরও কিছু অংশ পলিথিনের ব্যাগে মুখ বন্ধ করে ঘরের ভিতরে রেখে দেয় খুনি। গতকাল সকালে নগরীর ৩, ফরাজিপাড়া ‘হাসনাত মঞ্জিল’ চারতলার বাড়ির নিচতলা থেকে নিহতের মোটরসাইকেল ও পলিথিনে জড়ানো দুই পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া হত্যায় ব্যবহৃত দা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, গতকাল ভোরে নগরীর ফুলবাড়ি গেট এলাকা থেকে মো. আসাদুজ্জামানকে আটক করার পর তার স্বীকারোক্তিতে ফরাজিপাড়ার বাসা থেকে লাশের কাটা পা ও হত্যায় ব্যবহৃত দা-ছুরি উদ্ধার করা হয়। একই সময় বটিয়াঘাটা থেকে হত্যায় জড়িত অনুপমকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, ঘরের ভিতর বক্স খাটের নিচে পলিথিনে জড়ানো নিহতের পায়ের একাংশ, দা-ছুরি ও লাল বালতির মধ্যে দুই পায়ের উপরাংশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও (টিভিএস অ্যাপাসি) এ ঘর থেকে উদ্ধার হয়। তবে হত্যাকান্ডের পেছনে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টিকে পুলিশ খতিয়ে  দেখছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর খুলনা জেলা প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বলেন, এরই মধ্যে পিবিআই আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে। আর্থিক লেনদেনসহ তদন্তে কয়েকটি তথ্য সামনে এসেছে। তা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, নিহত হাবিবুর সাতক্ষীরা সদরের উমরাপাড়ার আবদুল হামিদের ছেলে। তিনি ইট-ভাটায় ঠিকাদারি সরদার হিসেবে কাজ করতেন। গত ৫ মার্চ বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেল নিয়ে খুলনায় আসেন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরে গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহানগরীর শেরেবাংলা রোডে পলিথিনে মোড়ানো লাশের দুটি অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দুপুরে ফরাজিপাড়া রোডে ড্রেনের পাশ থেকে দুটি ব্যাগে থাকা মাথা ও দুই হাত উদ্ধার হয়।

সর্বশেষ খবর