বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
রিজার্ভ চুরি

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধেই মামলা করল আরসিবিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ী প্রতিষ্ঠান ফিলিপাইনের বেসরকারি ব্যাংক আরসিবিসির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার প্রায় দেড় মাসের মাথায় উল্টো বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছে রিজ্যাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি)। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। আরসিবিসির এমন সিদ্ধান্তের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে-জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আজমালুল হোসেন কিউসি বর্তমানে নিউইয়র্কে রয়েছেন। তিনি দেশে ফেরার পর আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। গতকালই (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় কিউসির দেশে ফেরার কথা ছিল।

আরসিবিসি বলছে, তাদের কোম্পানির সুনাম ও ভাবমূর্তির ওপর বারবার ‘অশুভ আক্রমণ’ চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ কোটি পেসো (১৯ লাখ ডলার) দাবি করা হয়েছে মামলায়। এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটানের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে আরসিবিসিকে বাদী করে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক মামলা করায় আরসিবিসির সুনাম ক্ষুণœ হয়েছে। এ জন্য মানহানি মামলা করা হয়েছে। আরসিবিসি বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের ব্যাপারে আরসিবিসির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ কিংবা দাবি করেছে, সেগুলো অযৌক্তিক বলে মনে করে ব্যাংকটি। বাংলাদেশ ব্যাংক মামলা করার পর আরসিবিসি থেকে গ্রাহকরা তাদের গচ্ছিত আমানত তুলে নিচ্ছে বলে দাবি ব্যাংকটির, যা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে দায়িত্বে অবহেলা এবং হ্যাকারদের সহায়তার অভিযোগে সে দেশের মানি লন্ডারিং আইনে আরসিবিসির জুপিটার শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক মায়া শান্তোস দেগুইতোকে আটক করা হয়। পরে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে জেল-জরিমানা করে ফিলিপাইনের একটি স্থানীয় আদালত। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুইফট সিস্টেমে ৭০টি ভুয়া পরিশোধ অর্ডার পাঠিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১৯২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার অবৈধভাবে নেওয়ায় চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে একটি পরিশোধ অর্ডারে শ্রীলঙ্কায় দুই কোটি ডলার ও চারটি অর্ডারে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের একটি শাখার ভুয়া গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট হয়ে জুয়ার বাজারে চলে যায়। শ্রীলঙ্কা থেকে ইতিমধ্যে চুরি হওয়া সব অর্থ ফেরত এসেছে। ফিলিপাইনে যাওয়া অর্থের মধ্যে এক কোটি ৫০ ডলার দেশটির আদালতের আদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বাকি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার অনাদায়ী রয়েছে, যা আরসিবিসির কাছ থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় উদ্ধারের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সর্বশেষ খবর