রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্যের আবজাল দম্পতির বাড়ি ক্রোক

মোস্তফা কাজল

স্বাস্থ্যের সেই আবজালের রাজধানীর উত্তরার বাড়ি ক্রোক করা হয়েছে। আদালতের আদেশে আগামীকাল রাজধানীর উত্তরার আবজাল দম্পতির বাড়িতে ক্রোকাদেশের বিলবোর্ডটি স্থাপন করবে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। গত বৃহস্পতিবার দুদকের বোর্ড সভায় ক্রোকাদেশের বিলবোর্ড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংস্থার পরিচালক (প্রশাসন) জালাল সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা  গেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- আবজালের দুর্নীতি অনুসন্ধানে নিয়োজিত অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও সংস্থার উপ-পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম, সাবেক অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক সামছুল আলম এবং উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) এ কে এম মাহবুবুর রহমান।

চিঠিতে বলা হয়, ১৮ মার্চ রাজধানীর উত্তরায় (বাড়ি নম্বর ৪৭, সড়ক ১১ সেক্টর ১৩) আবজাল দম্পতির বাড়িতে বিলবোর্ড স্থাপনের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর আবজাল দম্পতির মালিকানায় থাকা অন্য স্থাপনা ও সম্পদেও বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। গত ২১ জানুয়ারি দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক অর্থাৎ হস্তান্তর বা লেনদেন বন্ধ এবং ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন জব্দ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেয় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। আদেশের পর পরই বিজি  প্রেস থেকে গেজেট প্রকাশ হয়। সংশি¬ষ্ট দফতরগুলোয় আদালতের আদেশ পৌঁছে দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশ অনুসারে একটি ইংরেজি ও একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া গত ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের মহাব্যবস্থাপক বরাবর দুদক থেকে চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে আবজাল, তার স্ত্রী ও নিকটাত্মীয়দের সব ব্যাংক হিসাবের বিষয়ে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়। এর মধ্যে গত ৮ ফেরুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ করার জন্য আদালত আদেশ দিলেও তাদের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ হয়নি। ব্যাংকের এসব হিসাব থেকে টাকা উত্তোলনসহ অন্যান্য লেনদেন চলছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।

আদালতের আদেশের পর দুই সপ্তাহেই আবজাল হোসেন, তার স্ত্রী রুবিনা খানম ও অন্য কয়েকজন নিকটাত্মীয়ের ব্যাংক হিসাবে নিয়মিত লেনদেন হয়েছে বলে দুদক জানতে পেরেছে। এ ছাড়া রুবিনা খানমের মালিকানাধীন রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে সরকারি ঠিকাদারি কাজের বিল আদায় হতো। সেই প্রতিষ্ঠানের হিসাবটিও সচল আছে এবং লেনদেন চলছে। আবজালের নিজের নামে ও তার যেসব নিকটাত্মীয়কে দুদক জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় এনেছে, তাদের হিসাবও সচল। ওই সব ব্যাংকের কর্মকর্তা দুদকে বলেছেন, জব্দের কোনো আদেশ না থাকায় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, তাদের কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো আদেশ নেই। এদিকে দুদক বলছে, তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট যেসব ব্যাংক হিসাবের তথ্য ছিল, সেগুলোর তথ্য উল্লেখ করে ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে টাকা তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দুদকের কাছে থাকা তথ্যের বাইরে  কোনো ব্যাংক হিসাব থাকলে সেখান থেকে হয় তো টাকা তুলতে পারে। কিন্তু আদালতের নির্দেশের পর কোনো ব্যাংক ওই দম্পতির টাকা ছাড় করলে সে বিষয়ে দুদক ব্যবস্থা নেবে। ওই প্রতিবেদনের পর দুদক আরও তৎপর হয়। বাংলাদেশ ব্যাংককে আবজাল দম্পতি ও তাদের সংশ্লিষ্টদের সম্পদ ফ্রিজ করতে ব্যবস্থা নেওয়া জন্য আবারও অনুরোধ জানানো হয়। পরে নতুন তথ্যের জন্য এসব দফতরে নতুন করে চিঠি পাঠায় দুদক।

সর্বশেষ খবর