রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
সুবর্ণচরে ধর্ষণ

সেই রুহুল আমিনের জামিন প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার আসামি রুহুল আমিনকে জামিন দিয়ে দেওয়া আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে হাই কোর্ট। ফলে বহিষ্কৃত এই আওয়ামী লীগ নেতার মুক্তি মিলছে না। আসামিপক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে গতকাল ছুটির দিনে হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বিচারকরা খাসকামরায় বসে আগের আদেশ প্রত্যাহারের (রিকল) সিদ্ধান্ত জানান। এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় ও অমিত তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন হাই কোর্ট বেঞ্চ রুহুল আমিনকে জামিন দিয়েছিলেন। পরে বৃহস্পতিবার বিষয়টি সাংবাদিকরা নজরে আনলে ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ বলেছিলেন, আসামির আইনজীবী রাষ্ট্রপক্ষকে বিভ্রান্ত করেছেন। ফলে কার জামিন হয়েছে, তারা বুঝতেই পারেননি। গতকাল আসামি রুহুল আমিনের আইনজীবী মো. আশেক-ই-রসুলের মোবাইল ফোনে সংশ্লিষ্ট আদালতের কর্মকর্তা ফোন দিয়েও পাননি বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায়। আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আগামী ২৫ মার্চ আদালত অবমাননার আবেদনও করা হবে। বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষ আদালতের নজরে আনার পর আদালত তৎপর হয়। জামিন আদেশ প্রত্যাহারের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার কার্যালয়ে বসে এ বিষয়ে বিস্তারিত সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে মাননীয় বিচারপতিদ্বয়কে বিষয়টি অবগত করা হলে যে জামিন আদেশটি দেওয়া হয়েছিল, আজ (শনিবার) সে আদেশটি তারা প্রত্যাহার করেছেন। এটাকে রিকল করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘এ আদেশের ফলে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আর কার্যকর হলো না। আমরা সব জায়গায় জানিয়ে দেব, যেন আগের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি জেল থেকে বের হতে না পারে।’ অ্যাটর্নি জেনারেল আসামিপক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, ‘এ মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যেগুলো আছে, ভিকটিমের যে বর্ণনা আছে, সেগুলো আবেদনে সন্নিবেশ না করে আদালতকে ভুল বুঝিয়ে এই আইনজীবী জামিন নিয়েছিলেন।’ এভাবে জামিন নেওয়া ‘আদালতের সঙ্গে প্রতারণার শামিল’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা প্রধান বিচারপতির নজরে আনব।’ অন্য বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘মাননীয় বিচারপতিদের প্রতি আমাদের আকুল আবেদন থাকবে, যখন তারা কোনো আবেদন দেখবেন, তখন যেন ওনারাও বিষয়টি লক্ষ্য রাখেন। এক আদালতে মেনশন করে অন্য আদালতে মুভ করা আদালতের প্রতি প্রতারণার শামিল।’ গত বছর ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিন রাতে সুবর্ণচরের মধ্যবাগ্যা গ্রামে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে চল্লিশোর্ধ্ব এক নারীকে ধর্ষণ করা হয়।

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় এ পর্যন্ত সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক (বহিষ্কৃত) রুহুল আমিনসহ ১০ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর