সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিলেটের ব্যবসায়ীদের অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমদানি-রপ্তানি ও পর্যটন ব্যবসায়। পর্যটন খাতে অন্তত ৫শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে-মন্তব্য চেম্বার নেতৃবৃন্দের। কারফিউ শিথিল হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে খুলতে শুরু করে সিলেটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানগুলো। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনেও বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল খোলা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার পর থেকে বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে ব্যবসায়ীদের সুখ-দুঃখের কথা শুনছেন সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দ। বিভিন্ন বিপণিবিতান পরিদর্শনকালে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টির সভাপতি তাহমিন আহমদ জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি সিলেটের ছোট-বড় সকল ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিলেটের ১৩টি স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে এক সপ্তাহ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল।
ফলে সরকার যেমনি রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে, তেমনি ব্যবসায়ীদেরও বড় লোকসান গুনতে হয়েছে। কমপ্লিট শার্টডাউন ও কারফিউয়ের কারণে সড়কে ট্রাকে আটকা পড়ে ৮-১০ কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়েছে। ব্যবসায়ী নেতা তাহমিন আরও জানান, আন্দোলনের কারণে সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট বন্ধ ছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন দিতে হবে, ভ্যাট-ট্যাক্স ঠিকই দিতে হবে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যারা ব্যবসা করেন তাদের ব্যবসাও বন্ধ রয়েছে। সবমিলিয়ে সিলেটের ব্যবসায়ীদের অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ মনে করেন, এ দুরবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ব্যবসায়ীদের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা সহজ করে দেওয়া উচিত। বিশেষ করে প্রণোদনা হিসেবে ব্যবসায়ীদের এক বছরের জন্য ভ্যাট, ট্যাক্স, লাইসেন্স নবায়ন ফি ও ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ করে দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে তাদের ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে। সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান রিপন বলেন, ‘এমনিতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত অথচ এ পরিস্থিতিতেও ভ্যাট অফিস থেকে ফোনে ব্যবসায়ীদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। সিলেট নগরে সাড়ে সাত হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কর্মচারীর বেতন, নানা বিলের পরও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আছেন ঋণের চাপে। তাদের মাথার ওপর কিস্তির খড়্গ। আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মার্কেটের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ৮-৯ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’