রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর একটি বাসা থেকে মিষ্টি আক্তার (১৯) নামে এক নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, কিছুদিন আগে কোটা সংস্কার সহিংসতায় স্বামী জিসান আহমেদের মৃত্যু হয়। তার শোক সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেন মিষ্টি। জিসানের বাবা বাবুল সরদার বলেন, জিসানের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন পুত্রবধূ মিষ্টি। জিসানের প্যান্ট-শার্ট নিয়ে বসে থাকত। আমি বলছি, তুমি খাও, বলে খাব জিসানকে এনে দাও। সোমবার সকালে আত্মহত্যা করে মিষ্টি।
যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মো. শাহ আলম আলী জানান, খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে যাত্রাবাড়ীর গ্যাস রোড এলাকার একটি বাড়ির ৫ম তলা থেকে মিষ্টি নামে ওই তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন আগে মিষ্টির স্বামী জিসান মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মিষ্টি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পরিবারের।
এসআই আরও জানান, মিষ্টির স্বামী জিসান কিভাবে মারা গেছে সেটা জানা যায়নি। তবে তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। দোকানে দোকানে পানি সাপ্লাই দিতেন। স্বামীর মৃত্যুর পরে মিষ্টি শোকাহত হয়ে খাওয়া-দাওয়া করতে চাইতেন না। স্বামীর কাপড়-চোপড় ধরে কান্নাকাটি করতেন। মিষ্টির পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২০ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানার রায়েরবাগ ২ নম্বর গলিতে দোকানে পানি সরবরাহ করছিলেন জিসান। এ সময় সহিংসতার মধ্যে পড়ে শ্বশুরবাড়ির সামনেই গুলিবিদ্ধ হন তিনি। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মাত্র ১৪ মাস আগে প্রেম করে বিয়ে হয়েছিল জিসান ও মিষ্টির।
এদিকে, ছেলে জিসানের মৃত্যুর খবর পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে চলে আসেন জিসানের বাবা বাবুল সরদার। স্থানীয়রা বলছেন, বেশকিছু দিন আগে বাবার কাছে মোটরসাইকেল চেয়েছিল জিসান। সড়ক দুর্ঘটনার ভয়ে ছেলেকে মোটরসাইকেল কিনে দেননি বাবা বাবুল সরদার। কিন্তু সাম্প্রতিক সহিংসতায় গুলিতে মারা গেছেন তার একমাত্র ছেলে জিসান।