কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গুলিতে সিয়ামের অকালমৃত্যুতে স্বপ্ন ভাঙল বগুড়ার হাড্ডিপট্টির শাপলা বেগমের। জানা যায়, সিয়ামের বাবা আশিক ড্রাইভার ও মা শাপলা বেগম দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া শহরের হাড্ডিপট্টি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছেন। তাদের তিন ছেলে দুই মেয়ে। এর মধ্যে সিয়াম পালিত ছেলে। সাত বছর বয়সে স্টেশন থেকে নিয়ে এসে লালনপালন করেন তারা।
তাদের আরেক ছেলে শাওন (১৪), মেয়ে ছোয়া (১২), ছড়া (৬) ও ৪ বছরের শিশু শিশিরকে নিয়ে তাদের সংসার। অভাবের সংসারে সিয়ামের মাও ভাঙাড়ি কুড়িয়ে স্বামীকে সহযোগিতা করতেন। ৫ সন্তান নিয়ে ভালোই কাটছিল তাদের সংসার। হঠাৎ নেমে আসে তাদের সংসারে কালো মেঘ। কোটা সংস্কার ইস্যুতে ২০ জুলাই বগুড়ায় পুলিশ-শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সিয়াম ভাঙাড়ি কুড়ানো শেষ করে বিকাল ৪টার দিকে সেউজগাড়ী আমতলা এলাকায় হোটেলে খাবারের জন্য যাচ্ছিল। এমন সময় অজান্তে তার বুকে গুলি লেগে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বেসরকারি একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সিয়ামের মা শাপলা বেগম জানান, সিয়াম শুভ আমার পালিত সন্তান হলেও নিজের সন্তানের চেয়েও বেশি ভালোবাসতাম তাকে। ৭ বছর বয়স থেকে তাকে কোলেপিঠে বড় করেছি। আমাদের অভাবের সংসারে সেও সহযোগিতা করত। ভ্যানে করে ভাঙাড়ি কুড়িয়ে সৎ পথে অর্থ উপার্জন করত। হঠাৎ করে আমরা তাকে এভাবে হারাব তা কখনো ভাবিনি।