কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বর্তমান পরিস্থিতিতে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিম কোর্ট বার) দুই পক্ষ। গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে প্রথমে সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সমর্থক চারজনের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। পরে সমিতির সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক সরকার সমর্থক ১০ জনের উপস্থিতিতে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় সাধারণ ছাত্রদের ওপর ভর করে বিএনপি-জামায়াত-শিবির সারা দেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করেছে। বর্তমানে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী বিএনপি-জামায়াত দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি করে বাংলাদেশকে একটি মৌলবাদী ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে তৎপর। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কোটা আন্দোলন কেন্দ্র করে এ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় আহত ও নিহত পরিবারের পাশে সরকার আন্তরিকভাবে দাঁড়িয়েছে এবং ছাত্রদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যেন এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য সরকার ও দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় সম্পদ, আইনশৃঙ্খলা ও জনজীবন রক্ষায় বদ্ধপরিকর। তাই স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের দেশবিরোধী কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, মেট্রোরেল, সেতু ভবন, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের টোল প্লাজা ও নরসিংদী কারাগারে কারা হামলা চালিয়েছে, তা এখনো কেন চিহ্নিত করা যায়নি? তার কোনো ভিডিও ফুটেজও সরকার প্রকাশ করছে না কেন? কোন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা হামলা করেছে, তা-ও প্রকাশ করা হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন তা প্রতিরোধ করতে পারেনি, কেন সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি সে প্রশ্নের উত্তর সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, সরকার এরই মধ্যে কয়েক লাখ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে, প্রায় ১৩ হাজার ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে। বাসাবাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ছাত্রদের গ্রেপ্তার করছে। এ আন্দোলনকে রাজনৈতিক রং দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিচারপতি আবদুল মতিন ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালের নেতৃত্বে গঠিত গণতদন্ত কমিশনকে আমরা সমর্থন জানাচ্ছি এবং এ কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য আইনজীবীসহ দেশের সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কোটা আন্দোলনে প্রতিটি হত্যাকান্ড ও আহতদের ব্যাপারে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।