রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে গাছ থেকে আমড়া পেড়ে খাওয়ার ঘটনা কেন্দ্র করে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক কয়েদিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘষ ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই কারারক্ষী মোতালেব হোসেন ও শাহজাহান আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
কারাগার ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কারাগারের ভিতরের গাছ থেকে আমড়া পেড়ে খাওয়ার ঘটনা কেন্দ্র করে দুজন কয়েদির মধ্যে ঝগড়া বাধে। এ দুই কয়েদি হলেন বাহারাম বাদশা ও রফিকুল ইসলাম। ঝগড়ার এক পর্যায়ে রফিকুল বাহারাম বাদশাকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ খবর কারাগারে পৌঁছালে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়। প্রথমে কারারক্ষীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হন। কারা কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করে। পরে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে কারাগারের ভিতরে প্রবেশ করেন। বর্তমানে কারাগারের নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। জানা গেছে, বাহারাম বাদশা রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কুমেদপুর ইউনিয়নের বাগবাড়ি এলাকার বাহাদুর মিয়ার ছেলে। দুলা মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি তিনি। বাহারাম বাদশার আরও তিন ভাই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে রংপুর কারাগারে রয়েছেন। তিন ভাই হলেন আলমাস মিয়া, মাহ আলম ও ওসমান গনি। বাহারাম বাদশার মৃত্যুর খবর কারাগারে পৌঁছালে ভাইয়েরা সংগঠিত হয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এ সময় কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। তাদের কারাগারের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, কয়েদিদের দুই পক্ষে মারামারি ঘটেছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। বাহারাম বাদশার হত্যায় জড়িত রফিকুলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।