ভরা মৌসুমেও বরিশালে মিলছে না ইলিশ। গতকাল নগরের ইলিশ মোকাম পোর্ট রোডবাজারে ঘুরে দেখা গেছে, আমদানি খুব কম। তাই শ্রমিকদের মাঝে ব্যস্ততাও নেই। পোর্ট রোডের আড়ত কর্মচারী মো. রানা বলেন, মোকামে এখন আগের চেয়ে অনেক কম মাছ আসছে। গতকাল পোর্ট বাজারে ৫০ মণ মাছ বেচা-বিক্রি হয়েছে। তিনি জানান, সর্বোচ্চ এক কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের মাছ এসেছে বাজারে। এর আগে দেড় কেজি থেকে এক কেজি ৭০০ গ্রাম সাইজেরও মাছ এসেছে।
ভরা মৌসুমে ইলিশ মাছ না পাওয়া কারণ হিসেবে সমুদ্রে মাছ শিকারের ৬৫ দিনকে দূষছেন জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম। তিনি বলেন, সমুদ্রে ইলিশ শিকারের জন্য ২৮ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা থাকে। এর মধ্যে ১৫ জুন থেকে ২৩ জুলাই বাড়তি নিষেধাজ্ঞা থাকে। কিন্তু ওই সময় ভারতীয় জেলেরা এসে মাছ শিকার করে। এই মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইলিশের ভরা মৌসুম। ভারত ২০ মে থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সমুদ্রে ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ করে। একই সময় বাংলাদেশেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তাহলে সমস্যা আর থাকবে না। তিনি বলেন, ইলিশ মূলত সমুদ্রের মাছ। বাংলাদেশি জেলেরা সমুদ্র থেকে অত মাছ শিকার করতে পারে না। যা ভারতীয় জেলেরা করতে পারে। নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশি জেলেরা সমুদ্রে যায় না। এ সুযোগে ভারতীয় জেলেরা অত্যাধুনিক জাল দিয়ে মাছ শিকার করেছে। যার কারণে সমুদ্র ইলিশশূন্য হওয়ায় অভ্যন্তরীণ নদীতে মাছ নেই। গতকাল বাজারে পাইকারি দরে এক কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের মাছ প্রতিমণ ৬২ হাজার, কেজি সাইজের মাছ প্রতিমণ ৬০ হাজার, কেজির নিচে এলসি সাইজের মাছ ৫৭ থেকে ৫৮ হাজার, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম সাইজের মাছ ৫৫ থেকে ৫৬ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের তালতলী বাজারে প্রতিদিন অভ্যন্তরীণ নদীর ১৫/২০ মণ ইলিশ মাছ বিক্রি হয়। ওই বাজারের পাইকারি বিক্রেতা নাইম সিকদার জানান, গত দুই দিন ধরে কোনো মাছ আসে না। বর্তমানে আমরা অসহায় অবস্থায় রয়েছি। নগরের বেলতলা বাজারের খুচরা মাছ বিক্রেতা মো. জাকির হোসেন বলেন, ইলিশ মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি। বৃহস্পতিবার নদীতে মাছ শিকার করা জেলেদের কাছে গিয়ে মাত্র একটি মাছ পেয়েছি। গতকাল গিয়ে কোনো মাছ পাইনি। ইলিশ মাছ না পেলে সংসার চালাতে কষ্ট হয়।