বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেছেন, ছাত্রদের আন্দোলনে জনতার কাতারে দেশের সবশ্রেণির মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। অসংখ্য ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছে জালিমের ক্ষমতা কত দুর্বল। এখন বিগত সরকারগুলো জুলুম, শোষণ ও বৈষম্যের যে দেয়াল তৈরি করেছে তা ভাঙতে হবে। তাই ভবিষ্যতে কেমন বাংলাদেশ এ দেশের মানুষ প্রত্যাশা করে- তা নির্ধারণের জন্য জাতীয় সংলাপ জরুরি।
গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি নবগঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টাবৃন্দকে অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জানান। মাওলানা মামুনুল হক আরও বলেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তা-চেতনার আলোকে নতুন বাংলাদেশ গড়তে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পদত্যাগে দেশের মানুষ জালেমের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের মানুষ বিজয় অর্জন করেছে। এ বিজয়কে ধূলিসাৎ করতে একটি চক্র দেশের সম্পদ লুটপাট করছে এবং বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস করছে। এদের ঐক্যবদ্ধভাবে পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ করার জন্য দেশবাসী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, আগস্ট মাস দেশের জনগণের জন্য বিজয়ের মাস। জাতির চেতনার সঙ্গে সহমত পোষণ করে ৫ আগস্টের বিপ্লবকে মহিমান্বিত করার জন্য ১৫ আগস্টের শোক দিবস বাতিল করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নিয়েও চুপ করে বসে নেই। বরং সেখান থেকে উসকানি দিয়ে জনগণের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করতে এদেশীয় দোসরদের মাঠে নামিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনার শাসনামলে পিলখানায় নিহত ও আহত সেনাসদস্য, ২০১৩ সালে নিহত ও আহত হেফাজতের নেতা-কর্মী, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা নিহত ও আহত হয়েছেন প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দ্রুত শাস্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি। মামুনুল হক বলেন, এ দেশের মানুষ অতীতেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছে, বর্তমানেও করছে- যার দৃষ্টান্ত মাদরাসার ছাত্র ও ইসলামী দলের নেতা-কর্মীরা সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় ও ঘরবাড়ি পাহারা দিয়ে প্রমাণ করেছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তিনি দেশবাসী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, পরাজিত শক্তি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। অর্জিত বিজয়কে নস্যাৎ করতে নানামুখী চক্রান্ত করছে। তাদের ষড়যন্ত্র রুখতে পাড়া-মহল্লায় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে ঐক্যবদ্ধভাবে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।