সড়কে বসেই ‘প্রতীকী পরীক্ষা’ ও ‘প্রতীকী বিষপান’ কর্মসূচি পালন করছিলেন বৈষম্যবিরোধী নার্সিং অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এ সময় অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল দুপুরে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। এতে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) অধিভুক্ত রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট সরকারি নার্সিং কলেজ এবং বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘শনিবার ২০১৯-২০ সেশনের বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা এরই মধ্যে ৯ মাস পিছিয়ে আছি। কবে নাগাদ আমাদের পরীক্ষা হবে কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণে চরম অনিশ্চয়তায় ২৩টি কলেজের প্রায় ৩ হাজার নার্সিং শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ।’
এদিন বিএসসি চতুর্থ বর্ষের রিসার্চ-ইন-নার্সিংয়ের প্রতীকী পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ভিতর থেকেই চারজনকে উপাচার্য, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও পরীক্ষা কক্ষ পরিদর্শক (এক্সটারনাল ও ইন্টারনাল) করা হয়। এ সময় হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর আন্দোলনকারী সিংহভাগ পরীক্ষার্থীকে ফেল দেখিয়ে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। হতাশ হয়ে প্রতীকী বিষপান করেন শিক্ষার্থীরা। তবে প্রচ- রোদ ও গরমে অসুস্থ হয়ে পড়লে অন্তত ১৫ জনকে রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। ভর্তি করা হয় ১১ জনকে। এদের মধ্যে দুজন রাজশাহী নার্সিং কলেজের, একজন উদয়ন নার্সিং কলেজের ও বাকিরা রংপুর এবং লালমনিরহাট নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী। প্রতীকী পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এভাবেই ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ফেল করানো হয়। আন্দোলনে দাবি আদায় হলেও ফলাফলে প্রভাব বিস্তারের শঙ্কায় তারা আতঙ্কিত। অসুস্থ হয়ে অনেককেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় আলটিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন নার্সিং শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রায়হান আলী বলেন, যে সময় পড়ার টেবিলে বই-খাতা নিয়ে থাকতাম, হাসপাতালে ইন্টার্নশিপে গিয়ে রোগীদের সেবা করতাম; সেই সময় রোদ-বৃষ্টি ও অসংখ্য বাধা মোকাবিলা করে আন্দোলন করতে হচ্ছে আমাদের। দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে যাওয়ায় রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ থেকে এসে দিনের পর দিন রাস্তায় পড়ে আছি। বেশ কয়েকজন অসুস্থ। দাবি না মানলে মৃত্যু ছাড়া কোনো পথ নেই। রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। ১১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। আশা করি সুস্থ হবেন তারা।