প্রতি বছর ভাদ্র মাসের তাল পাকা গরমের পর আশ্বিন মাসে ভোরে কিছুটা শীত অনুভূত হয়। এবার প্রকৃতি অনেকটাই বিরূপ আচরণ করছে। আশ্বিনেও মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে রংপুর অঞ্চলে। এতে মানুষের পাশাপাশি রংপুর চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলো কাহিল হয়ে পড়েছে। চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলো একটু শীতল পরশের জন্য ছটফট করছে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এসব প্রাণীর শরীর ঠিক রাখতে ভিটামিন সি ও স্যালাইন খাওয়াচ্ছে। বাঘ এবং সিংহের খাঁচায় দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক ফ্যান। গতকাল দুপুরে চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা গেছে প্রাণীগুলো শীতল পরশের জন্য ছটফট করছে। তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে গরমের কারণে চিড়িখানার প্রাণীদের বিশেষ যত্ন নেওয়া হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল দুপুর ৩টায় রংপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবারও তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি। গত এক মাসের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ তাপমাত্রাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। এ অবস্থা আরও তিন-চার দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান। এদিকে চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর চিড়িয়াখানায় ৩১ প্রজাতির প্রায় ২৫৪টি প্রাণী রয়েছে।
চিড়িয়াখানায় যেসব প্রাণী রয়েছে সেগুলো হলো- সিংহ ২টি, জলহস্তী ৩টি, ময়ূর ৮টি, হরিণ ৫৯টি, অজগর সাপ ২টি, ইমু ৩টি, বানর ৯টি, কেশওয়ারি ১টি, গাধা ৩টি, ঘোড়া ২টি, ভাল্লুক ১টি উল্লেখযোগ্য। দেশে দুটি সরকারি চিড়িয়াখানার মধ্যে রংপুরে একটি। এসব প্রাণীর মধ্যে নিঃসঙ্গ অবস্থায় রয়েছে ভাল্লুক, হনুমান, কেশওয়ারি। কিছুদিন আগে নিঃসঙ্গ অবস্থায় থাকা উটপাখিটি মারা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে কর্তৃপক্ষ সঙ্গীহীন প্রাণীগুলোর সঙ্গী আনার জন্য ঢাকায় আবেদন করলেও তা গ্রাহ্য হয়নি। প্রয়াত জাপা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ রংপুর নগরীর হনুমানতলা এলাকায় ১৯৮৯ সালে গড়ে তোলেন রংপুর চিড়িয়াখানটি। এটি দর্শনার্থীদের জন্য ১৯৯২ সালে খুলে দেওয়া হয়। প্রায় ২১ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ চিড়িয়াখানা। প্রতিদিন এখানে কয়েক হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হয়। চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা আম্বার আলী বলেন, প্রাণীদের সুরক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের স্যালাইন, ভিটামিন সি দেওয়া হচ্ছে। বাঘ-সিংহকে শীতল রাখার জন্য খাঁচায় ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচ- গরমে মানুষের যেমন অস্বস্তি হচ্ছে, তেমনি প্রাণীদের অস্বস্তি হচ্ছে বলে তিনি জানান।