নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও রংপুরে বন্যায় পানি কমছে। তবে ভাঙন-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ।
নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন ডিমলা উপজেলার তিস্তাপাড়ের মানুষ। গতকাল সকাল থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। কিন্তু এখনো তলিয়ে রয়েছে চরাঞ্চলের আমন খেত ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পথঘাট। ফলে এখনো পানিবন্দি কয়েক হাজার পরিবার। এর মধ্যে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।
তিস্তার পানি কমায় ইতোমধ্যে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখরিবাড়ী, টেপাখরিবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে নদী ভাঙনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। ডিমলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মেজবাহুর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ৩০ টন চাল ও ১ হাজার ৫৮০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ছাড়া আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবকটি (৪৪) জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পানি ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া নদীপাড়ের পরিস্থিতির খোঁজখবর সার্বক্ষণিক রাখা হচ্ছে। এখন আর পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই।
কুড়িগ্রাম : উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে গত তিন দিন ধরে কুড়িগ্রামের ধরলা ব্রহ্মপুত্র দুধকুমার নদের পানি সমতলে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছিল রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষ। সকাল থেকে পানি কমে যাওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরেছে। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙনের।
লালমনিরহাট : উজানের ঢল ও টানা কয়েকদিনে বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি কমে যাওয়ায় ঘরবাড়িতে ফিরতে শুরু করছে বানভাসি মানুষ। তবে বন্যার কারণে লালমনিরহাট সদর উপজেলার ১১টি এবং আদিতমারী উপজেলার ৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
রংপুর : রংপুরে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি ৪৯ সেন্টিমিটার কমেছে। এতে করে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচর থেকে পানি সরে যেতে শুরু করেছে। তবে এখনো কিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। সাময়িক বন্যায় তিস্তাপাড়ে আবাদ করা ধান খেত, মরিচ ও বাদামের খেত পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন নদীপাড়ের মানুষ।