দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চট্টগ্রাম-১২ আসনের সাবেক এমপি ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীসহ আরও ১০ জন এমপির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে কমিশন সভা থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুদক বলছে, সাবেক এই ১০ এমপির বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও প্রকল্পে অনিয়মসহ নানাভাবে দেশে-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের তথ্য আমলে নেওয়া হয়েছে।
সামশুল হক ছাড়া আর যাদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরী, ময়মনসিংহ-১০ এর ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল, ফেনী-১ এর আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, নেত্রকোনা-৪ এর ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার, কুমিল্লা-৫ এর এম এ জাহের, নীলফামারী-১ এর আফতাব উদ্দিন সরকার এবং রাজশাহী-১ এর ওমর ফারুক চৌধুরী। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি হোসনে আরা এবং রাঙামাটি আসনের সাবেক এমপি দীপংকর তালুকদারের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
উল্লেখ্য, এর আগে গত দুই মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের অন্তত ১০০ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা, এমপি, সচিব ও পুলিশের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
জানা গেছে, রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মুছা মাতব্বর, সহ-সভাপতি বৃষকেতু চাকমা, অংসিপ্রু চৌধুরী ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক রেমলিয়ানা পাংখোয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে সংস্থাটি।
দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম-১২ আসনের সাবেক এমপি ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি দরে প্রাক্কলন তৈরি করে টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, মাদক চোরাকারবারিদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়া, তার এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিলের ওপর অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নীলফামারী-১ আসনের সাবেক এমপি আফতাব উদ্দিন সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করে বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহিভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ। এসব অভিযোগে তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। রাজশাহী-১ আসনের সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, মাদক চোরাকারবারিদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়াসহ দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। কুমিল্লা-৬ আসনের এম এ জাহেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ- তিনি চাঁদাবাজি, কোটি কোটি টাকার গ্যাস চুরিসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।