বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের চুক্তি পর্যালোচনায় গঠন করা জাতীয় রিভিউ কমিটি জনগণের কাছে দুর্নীতির তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উৎপাদন এবং সরবরাহকারী সংস্থার দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত ই-মেইলে পাঠানো যাবে। গতকাল জাতীয় রিভিউ কমিটি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই আহ্বান জানিয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে শুরু করে চলতি মাসের শেষ দিন পর্যন্ত রিভিউ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
করা যাবে। দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণ [email protected] এই ই-মেইল ঠিকানায় পাঠাতে বলা হয়েছে। রিভিউ কমিটি বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করবে। এই আইনটি জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ‘ইনডেমনিটি’ আইন হিসেবে পরিচিত। এসব চুক্তি পর্যালোচনায় পাঁচ সদস্যের একটি জাতীয় কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। গত ৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় রিভিউ কমিটি গঠনের ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করে। পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন বুয়েটের অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট আলী আশফাক, বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন এবং ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক মোশতাক খান।
তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সালে দুই বছরের জন্য ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন’ করে। পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালে দুই বছর, ২০১৪ সালে চার বছর, ২০১৮ সালে তিন বছর এবং সর্বশেষ ২০২১ সালে পাঁচ বছরের জন্য আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। এ আইনে এমন বিধান করা হয় যে বিদ্যুতের জন্য জ্বালানি আমদানি অথবা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন অথবা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অন্য কোনো কার্যক্রম, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের কাছে প্রশ্ন উপস্থাপন করা যাবে না।
আদানি-সামিটসহ ১১ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য চেয়েছে কমিটি: বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিগুলোর মধ্যে আদানি ও সামিটসহ আরও ১১ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্যউপাত্ত চেয়েছে জাতীয় রিভিউ কমিটি। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর অধীন সম্পাদিত চুক্তি পর্যালোচনা করা হবে। এ জন্য সরকার গঠিত জাতীয় রিভিউ কমিটির গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ ভবনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সভায় ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্ট ও তথ্যউপাত্ত সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে মেঘনাঘাট ৫৮৩ মেগাওয়াট, বাঘাবাড়ী ২০০, পটুয়াখালী ১৫০, মোংলা ১০০, আশুগঞ্জ ১৫০, মানিকগঞ্জ ১৬২, কড্ডা ৩০০, সুন্দরগঞ্জ ২০০, লালমনিরহাট ৩০, সুতিয়াখালী ৫০ এবং গড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব তথ্য-উপাত্ত ও ডকুমেন্ট কমিটিকে সরবরাহের জন্য বলা হয়েছে।