শরতের সাদা কাশফুলের স্নিগ্ধতার সঙ্গে আকাশে মেঘের ভেলার মিতালি নাগরিক জীবনে এক রূপকথার গল্পের মতো। ইট-কাঠের যান্ত্রিক ব্যস্ততার জীবনে কখন শরৎ আসে আবার চলেও যায় তা টের পাওয়া যায় না। ঋতু বৈচিত্র্যের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নগরে প্রায় নেই বললেই চলে।
তবে রাজধানীর সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নাগরিক জীবনের বাসিন্দাদের মনে করিয়ে দেয় প্রকৃতিতে শরৎ এসেছে। শুভ্র সুন্দরের অনাবিলতাকে রাজধানীর বাসিন্দাদের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে বরাবরের মতো নানা বর্ণাঢ্য আয়োজনে গতকাল রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরির মধ্য দিয়ে শরৎ উদযাপন করেছে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।
সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় যন্ত্রসংগীত শিল্পী মো. ইউসুফ খানের সরোদ বাদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ উৎসব। কথামালা, কবিতা ও গানের মাধ্যমে সাজানো ছিল উৎসব। শিল্পীরা গাইলেন সম্প্রীতি, মৈত্রী ও ভালোবাসার গান। সুর, তাল, ছন্দের আবাহনে শরৎ উৎসবের ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘প্রকৃতির সঙ্গে মানবের মিলনে জীবনের আনন্দরস খুঁজে পাওয়ার চিরন্তন শারদীয় উৎসবে এবার মিশে আছে বেদনার সুর।’ শরৎ উৎসবের ঘোষণা পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। উৎসবের পরিবেশনা পর্বে সুরবিহারের শিল্পীদের পরিবেশনায় ছিল ‘ওগো শেফালি বনে মনের কামনা’। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা পরিবেশন করেন রবীন্দ্রসংগীত ‘দেখো দেখো শুকতারা আঁখি মেলে চায়’ ও নজরুলসংগীত ‘এ কী অপরূপ রূপে মা তোমায়’ গান দুটি। সীমান্ত খেলাঘর আসরের শিশুরা পরিবেশন করে রবীন্দ্রনাথের ‘আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্র ছায়ায়’ গানটি। শিল্পবৃত্তের শিশুদের পরিবেশনায় ছিল দলীয় আবৃত্তি প্রযোজনা ‘শরৎ রানি’। দলীয় সংগীত আমার রাত পোহালো শারদ প্রাতে পরিবেশন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। নির্ঝরণী সংগীত একাডেমি পরিবেশন করে ‘এসো হে সজল শ্যামল ঘন দেয়া’। সমস্বরের শিল্পীরা শোনান ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’। এককভাবে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন ফাহিম হোসেন চৌধুরী, প্রিয়াংকা গোপ, অণিমা রায়, শিল্পী তানভীর আলম সজীব, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, স্নিগ্ধা অধিকারী, নবনীতা জাইদ চৌধুরী অনন্যা, ফেরদৌসী কাকলী ও রোমানা আক্তার।